Wednesday, October 30th, 2013
ভারতে পুলিশি হয়রানির মুখে আনু মুহাম্মদের নেতৃত্বে জাতীয় কমিটির প্রতিনিধি দল
ভারতের মধ্য প্রদেশে পুলিশি হয়রানি এবং অবরুদ্ধতার মধ্যে পড়েছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির প্রতিনিধি দল। জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে উন্মুক্ত খনি দেখতে গেলে এই পরিস্থিতি ঘটে। ২৭ অক্টোবর প্রতিনিধি দল ঝাড়খণ্ড থেকে মধ্য প্রদেশে ঢোকার পরই শুরু হয় পুলিশি নজরদারি। প্রতিনিধি দলের সদস্য নুরুজ্জামান জানান, ২৮ তারিখ সকাল থেকেই হোটেলে পুলিশি নজরদারি রাতের বেলায় গ্রেফতারি হুমকিতে ঠেকে। পরে সবাইকে হোটেলে পরদিন দুপুর ১১টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ করে রাখে পুলিশ।
গত ২৩ অক্টোবর ভারতের উন্মুক্ত কয়লা খনি দেখতে ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের নেতৃত্বে ভারতে আসেন। কোলকাতায় ১ দিন অবস্থানের পর ঝাড়খণ্ডে ২ দিন অবস্থানের পর মধ্য প্রদেশে ঢোকার পরই শুরু হয় পুলিশের কড়া নজরদারি। ২৮ তারিখ সারাদিন খনি এলাকা ঘুরে সন্ধ্যায় এখানকার কয়লা খনি এবং পাওয়ার প্ল্যান্টের কারণে ক্ষতিগ্রস্থদের কয়েকটি সংগঠনের সাথে মত বিনিময় সভায় বসে প্রতিনিধি দল। সভা শেষ হলে জানা যায়, প্রতিনিধি দলকে বহনকারি গাড়ির ২ ড্রাইভারকে সিংরুলি জেলার বিন্দ্যানগর থানার পুলিশ গাড়িসহ থানায় আটকে রাখে। প্রতিনিধি দলের সঙ্গে থাকা ভারতীয় নাগরিক, খনি বিরোধী আন্দোলনের কর্মী ভারগবি দিলীপ কুমার থানায় যোগাযোগ করলে, তাকে জানানো হয়, বাংলাদেশী প্রতিনিধি দলকে থানায় যেতে হবে এবং সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।পরের দিন সকালে সবাইকে থানা-পুলিশের জেরার মুখোমুখি হতে হবে, এরকম আলাপের মধ্য দিয়ে হোটেলে ফেরত আসেন তারা।জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ি শাখার আহবায়ক সাইফুল ইসলাম জুয়েল জানান, মধ্য প্রদেশের সিংরুলি জেলায় খনি দেখতে আসার পর থেকেই সকাল-বিকাল-রাত সারাক্ষণই তাদের পুলিশের নানা রকম প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। সমন্বয়কারি ভারগোবিকে তার রুমে এসে, বাংলাদেশিদের ব্যাপরে ব্যাপক জেরা করা হয়। এবং সবশেষে ২৯ তারিখ সকাল বেলা একে একে সবাইকে আলাদা আলাদা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার আগে সবার ফটো তোলা হয়। একজন সেন্ট্রাল ইন্টিলিজেন্স ডিপার্টমেন্ট ( সিআইডি) এর সিনিয়র কর্মকর্তা এবং সহকারি পুলিশ সুপার জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, আসলে আমাদের বিরুদ্ধে ওদের প্রকৃত অভিযোগ কি, সেটা সুস্পষ্ট ছিল না। কখনো বলেছে, বিনা অনুমতিতে আমরা কোল মাইনিং এলাকায় ঢুকেছি আবার বলেছে, না এইটা অভিযোগ না। তারা আমাদের সাথে ভারতের কোল মাইনিং এলাকার পরিবেশ, বাংলাদেশে এনটিপিসি’র অংশীদারিত্বে সুন্দরবনের কাছে রামপাল প্রজেক্ট নিয়ে কথা বলেছে। আমরা বলেছি, আমরা আসলে ওপেন পিট মাইনিং এলাকাগুলো দেখতে এবং পরিস্থিতি বুঝতে এসেছি, যেটা দুই দেশের জনগণেরই আগ্রহের বিষয়।
জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রতিনিধি দল পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ি উত্তর প্রদেশের বারানাসি’র উদ্দেশ্যে রওনা হন।
উল্লেখ্য, ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারি জাতীয় সংস্থা এনটিপিসি’র অধীনে কয়লার ভিত্তিতে সবচে বেশি পরিমান বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় এই সিংরুলি জেলাতেই।