?> পারমাণবিক বিদ্যুৎ: আধুনিকতার উপলক্ষ্যে ধ্বংসের আয়োজন « NCBD – National Committee of Bangladesh

Saturday, July 6th, 2013

পারমাণবিক বিদ্যুৎ: আধুনিকতার উপলক্ষ্যে ধ্বংসের আয়োজন

বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকট যতটা না পুরনো উৎপাদন মাধ্যম হিসেবে পারমাণবিক প্রযুক্তিকেন্দ্রিক পরিকল্পনা তার চেয়েও বেশী পুরনো। এই সুদীর্ঘ সময়ে রাষ্ট্রকাঠামো পরিবর্তিত হয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের সাশ্রয়ী-পরিবেশবান্ধব নানা উপায় উৎভাবিত হয়েছে। কিন্তু একগুয়ে শাসক গোষ্ঠীর চিন্তা থেকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আশা বিতাড়িত হয়নি। এ নিয়ে সদ্যই বাংলাদেশের সাথে রাশিয়ার ঋণচুক্তি হয়ে গেল। ২০২২ সালের মধ্যেই নাকি আমরা পেতে যাচ্ছি ২ হাজার মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ যা ২০৩০ সালের মধ্যে ৫ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হতে পারে।

থ্রী মাইল আইল্যান্ড দূর্ঘটনা, চেরনোবিল দূর্ঘটনা, ফুকুশিমা দূর্ঘটনার মত একের পর এক অভিশপ্ত ঘটনায় সাধারণ মানুষ যখন আতংকগ্রস্ত তখন আমাদেরকে বুঝানো হচ্ছে- রূপপুরে বসানো হবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। বোয়িং বিমান এর উপর বিদ্ধস্ত হলেও নাকি এ কেন্দ্রের কিছু ঘটবে না।

কিন্তু আমরা ভাল করেই জানি, প্রযুক্তি নিয়ে রাশিয়ার এই আস্ফালন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ব্যবসা প্রসারে রাশিয়ার নানান ধরণের ছলা-কলায় ভুলানোর প্রবণতা নতুন কিছু না। ষাটের দশকে এই রূপপুরেই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রিঅ্যাক্টরের চারপাশে নিরাপত্তা ব্যুহ (containment building) ছাড়াই ৪০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরীর পরিকল্পনা প্রস্তাব জমা দিয়েছিল রাশিয়া। নিরাপত্তা ব্যুহের অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে তখনও দম্ভভরে বলেছিল, আমাদের রিঅ্যাক্টর ডিজাইনে কোন খুঁত নেই, তাই এর চারপাশে ব্যুহ তৈরীর প্রয়োজন নেই। অথচ এর কিছু কাল পরেই ১৯৮৬ সালে তাদের নিজেদের কেন্দ্রেই ঘটে চেরনোবিল দূর্ঘটনা যাতে নিরাপত্তা ব্যুহ না থাকার কারণে তেজস্ক্রিয় দূষণ ছড়িয়ে পড়ে তাৎক্ষণিকভাবে। (Matin, 2012)

যে চেরনোবিল দূর্ঘটনা চিকিৎসা বিজ্ঞানে চেরনোবিল এইডস, চেরনোবিল পা, চেরনোবিল হৃদপিন্ড, চেরনোবিল থাইরয়েড, চেরনোবিল স্মৃতিবিভ্রাট নামের নানা রোগের জন্ম দিল সে দূর্ঘটনায় IAEA (আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা)  এবং WHO (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) কর্তৃক প্রণীত ‘দ্য চেরনোবিল ফোরাম’ রিপোর্টে মৃতের সংখ্যা দেখানো হয় মাত্র ৯ হাজার। পৃথিবীর ইতিহাসে এত বড় একটি দূর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা এত ছোট! এর কারণ কী?

এর কারণ দুটি। প্রথমত, এই রিপোর্টে সংখ্যা কমিয়ে দেখানোর জন্য পৃথিবীব্যাপী গবেষণালব্ধ এবং বহুল প্রচারিত ৩০ হাজার প্রকাশনার মধ্যে বাছাই করা মাত্র ৩৫০ টি গবেষণা প্রবন্ধ অবলম্বন করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, WHO এবং IAEA Resolution World Health Assembly এর ৩ নং আর্টিক্যাল অনুসারে পরস্পর হাতে হাত ধরে চলে। ৩ নং আর্টিক্যাল এর প্রথম প্যারায় বলা আছে, IAEA এবং WHO মনে করে যে পরস্পরের স্বার্থে তথ্য গোপনীয়তা প্রয়োজন (IAEA/WHO agreement (WHA 12.40))। যে IAEA এর কাজ হচ্ছে পরমাণু প্রকল্পের নিরাপত্তা দেখভাল করা সে IAEA’ই দূর্ঘটনা পরবর্তী বিভিন্ন গবেষণায় যাতে সঠিক তথ্য বের হয়ে আসতে না পারে সে জন্য নানান ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করে রেখেছে। এতে নিশ্চিত বোঝা যায় প্রকৃত ক্ষতির প্রকাশ পরমাণু বিদ্যুতের প্রসারকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে বিধায় IAEA এর স্বার্থে চেরনোবিল দূর্ঘটনার ক্ষতি কমিয়ে দেখানো হয়েছে এবং এ চেষ্টা অব্যাহত আছে। অতএব রূপপুর প্রকল্পে জালিয়াত IAEA এর বিভিন্ন শর্ত এবং তদারকি যে নিতান্তই লোক দেখানো তাতে কোন সন্দেহ নেই।

তাই স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত হিসাব কী?

এ প্রসঙ্গে ২০০০ সালে জাতিসংঘের তৎকালীন সেক্রেটারী জেনারেল কফি আনান বলেছেন,

“চেরনোবিল এমন একটি শব্দ যা আমরা আমাদের স্মৃতি থেকে মুছে ফেলতে চাই। কিন্তু এ ঘটনার শিকার ৭০ লক্ষেরও বেশী মানুষ কখনোই এটি ভুলতে পারবে না। প্রকৃত সংখ্যা কখনোই জানা যাবে না। কিন্তু ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৩০ লক্ষ শিশুর নিবিড় চিকিৎসা প্রয়োজন হবে। তাদের ভবিষ্যৎ জীবন বাধাগ্রস্ত হবে। অনেকেই অকাল মৃত্যু বরণ করবে।”

দূর্ঘটনার প্রকৃত চিত্র মিথ্যার চাদরে আড়াল করার প্রবণতা, নিষেধাজ্ঞা জারি করে সংবাদ প্রচারে বাধা দেয়া সহ নানানভাবে রাশিয়া (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন) চেষ্টা করেছে বিশ্ববাসীকে যতটা কম জানতে দেয়া যায়। এ কারণেই দূর্ঘটনার প্রথম দিনেই চেরনোবিল স্বাস্থ্যতথ্য জনসম্মুখে প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় যা বহাল থাকে ১৯৮৯ সালের ২৩ শে মে পর্যন্ত। এই তিন বছরে অগণিত মানুষ লিউকোমিয়ায় মারা যায় যা কাউকে জানতে দেয়া হয়নি। দূর্ঘটনার আট বছরেও দূষণ প্রতিক্রিয়া নিয়ে সরকারীভাবে কোন বিবৃতি দেয়া হয়নি। অতএব রাশিয়ার উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের আশ্বাস, জ্বালানী সরবরাহের অঙ্গীকার, রাসায়নিক বর্জ্য নিয়ে যাবার অঙ্গীকার- এ সবই যে ব্যবসায়িক কূট কৌশলের অংশ তা বুঝতে আর বাকি নেই। অন্তত অতীত ইতিহাসের ঘটনা পরম্পরা তাই বলে।

একটা উদাহরণ দিলেই রাশিয়ার তথ্য গোপনের জালিয়াতি আরো পরিষ্কার হবেঃ

চেরনোবিল দূর্ঘটনার পর তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ফার্স্ট মিনিষ্টার সিচেপিনের ১৯৮৬ সালের ২১ শে মে পাঠানো চিঠিতে এই বলে নির্দেশ দেয়া হয় যে, তেজস্ক্রিয়তায় অসুস্থ হয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হবে হাসপাতাল ত্যাগ করার সময় যদি প্রকট তেজস্ক্রিয়তার কোন লক্ষণ না থাকে তবে অসুস্থতার কারণ হিসেবে সাধারণ স্মৃতিবিভ্রাট (vegetovascular dystonia) লিপিবদ্ধ করতে হবে। এই নির্দেশের ফলে তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত অসংখ্য মানুষ হিসেবের বাইরেই থেকে যায়।

১৯৮৬-২০৫৬ সাল পর্যন্ত সময়কালের প্রজন্মকে বলা হয় চেরনোবিল প্রজন্ম যার উপর সরাসরি প্রভাব পড়বে বলে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন। নিচে একটি টেবিলের মাধ্যমে এই চেরনোবিল প্রজন্মের কতজন শুধুমাত্র তেজস্ক্রিয়তাজনিত ক্যান্সারে মারা যাবে সেটি উল্লেখ করা হলঃ

টেবিলঃ চেরনোবিল দূর্ঘটনায় তেজস্ক্রিয়তা জনিত ক্যান্সারে চেরনোবিল প্রজন্মের সাম্ভাব্য মৃত্যু (Malko, 2007)

দেশ

তেজস্ক্রিয়তা জনিত ক্যান্সারে মৃত্যু

বেলারুশ

১৭,৫৪৬

ইউক্রেন

১৭,৫৪৬

রাশিয়া

১৫,৭৪৮

জার্মানী

৫,৭৫৪

রোমানিয়া

৩,২৩৬

অষ্ট্রিয়া

৩,১৩১

যুক্তরাজ্য

২,৬৫৪

ইতালী

২,৩৩৭

অন্যান্য

১২,৮৯৯

সর্বমোট

৮৯,৮৫১

ক্যান্সার বহির্ভূত মৃত্যুর হুমকি তেজস্ক্রিয়তাজনিত ক্যান্সার মৃত্যু থেকেও বেশী। এর যৌক্তিকতা ১৯৯০-২০০৪ পর্যন্ত বর্ধিত মৃত্যু সংখ্যা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়।

টেবিলঃ ১৯৯০-২০০৪ পর্যন্ত চেরনোবিল তেজস্ক্রিয়তা দূর্ঘটনাজনিত মৃত্যু (Khudoley et al., 2006)

দেশ

ইউরোপিয়ান রাশিয়া

বেলারুশ

ইউক্রেন

সর্বমোট

মৃত্যু

৬৭,০০০

৫৯,০০০

৮৬,০০০

২১২,০০০

তেজস্ক্রিয়তার প্রতিক্রিয়া প্রাথমিক পর্যায়ের তুলনায় কখনো কখনো বাতাস-পানি বা পরিযায়ী প্রানী বাহিত হয়ে সেকেন্ডারী পর্যায়ের সংক্রমণে আরও তীব্র হয়ে ওঠে। একারণেই বিকলাঙ্গতা, মানসিক অপরিপক্কতা, বয়োবৃদ্ধি সহ মারাত্মক সব উপসর্গ প্রজন্মান্তরে ছড়াতে থাকে। এই প্রতিক্রিয়া দেখা যায় সমগ্র জীবজগতে। প্রকৃতিতে এর পরিবর্তন কৃষির মাধ্যমে তীব্রভাবে ফুটে ওঠে। অতিরিক্ত তেজস্ক্রিয়তার কারণে বেলারুশে ২৬৫,০০০ হেক্টর, ইউক্রেনে ১৩০,০০০ হেক্টর এবং রাশিয়ায় ১৭,০০০ হেক্টর কৃষিজমি ইতোমধ্যেই চাষাবাদের অনুপযুক্ত বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। (Aleksakhin et al., 2006)

জ্বালানী স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য বাংলাদেশে এটি আমদানী করার কথা বলা হলেও পারমাণবিক কেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও ভারত কিংবা পাকিস্তানের নড়বড়ে অবস্থার কথা আমাদের নীতিনির্ধারকেরা ভুলে থাকতে চাইছেন। তারা এও ভুলে থাকতে চাইছেন যে শুধুমাত্র উৎপাদন খরচ হিসেবে এটি সাশ্রয়ী হলেও বিশাল অবকাঠামোগত উন্নয়ন ব্যয়, সন্ত্রাসী হামলার ঝুকি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা আর ইনসুরেন্স খরচ মিলিয়ে এটি আর সাশ্রয়ী থাকে না। তাইতো এমআইটি (ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি) এবং ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো’র গবেষণাতেও পরমাণু বিদ্যুৎ সবচেয়ে খরুচে হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। (Rahman et al., 2011)

আমাদেরকে বলা হচ্ছে, যে কোন ধরণের ঝুকি মোকাবেলায় রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে ব্যবহার করা হবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। কিন্তু দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রযুক্তি যখন ফুকুশিমা ট্রাজেডি ঠেকাতে পারে না তখনই আরো আধুনিক তৃতীয় প্রজন্মের প্রযুক্তি বাজারে আসে আর ঠিক সে সময়ই ল্যাবরেটরীতে প্রস্তুত হতে থাকে চতুর্থ প্রজন্মের প্রযুক্তি। প্রযুক্তির আধুনিকায়নে এটি খুবই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু আধুনিকায়নের এ সূত্র পারমাণবিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে খাটে না। কারণ পারমাণবিক দূর্ঘটনায় যে বিকিরত কণা ছড়ায় তা ঢুকে পড়ে আমাদের শরীরে, খাবারের মাধ্যমে এসে পড়ে আমাদের খাদ্যশৃংখলে, মাটি-পানি-বাতাসের মাধ্যমে ছড়াতে থাকে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে। জীনগত পরিবর্তন কিংবা ক্রমোজোমাল পরিবর্তনে এটি ধীরে ধীরে ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। এর ক্রমবর্ধমান প্রকটতা সম্পর্কে আধুনিক বিজ্ঞান নিশ্চিত কিন্তু পরিণতি নিয়ে এখনও সন্দিহান। তাই যে পারমাণবিক ব্যবস্থার ত্রুটি পরিণতিই এখনও ধরা পড়েনি সে ব্যবস্থার প্রযুক্তিগত আধুনিকায়নের কথা বলে রূপপুর প্রকল্পের যথার্থতা প্রমাণের চেষ্টা নিতান্তই হীন উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

অনেকেই ভাবতে পারেন সদ্য ঘটে যাওয়া ফুকুশিমা ট্র্যাজেডির আপাত স্বল্প ক্ষতি উল্লেখ না করে আশির দশকে ঘটা চেরনোবিল দূর্ঘটনার ভয়াবহ পরিণতির কথা তুলে ধরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে ভয় ধরানোই বোধহয় এ লেখার মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।

অন্যান্য দূর্ঘটনার মত তাৎক্ষণিক মৃতদেহ গণনা করে পারমাণবিক দূর্ঘটনার প্রকটতা পরিমাপ করা যায় না। জাতীয়, অর্থনৈতিক, সামাজিক নানান দিকে এর প্রভাব ফুটে ওঠে ধীরে ধীরে। যেমন, ফুকুশিমা ট্র্যাজেডির পর জাপানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় তহুকো’র উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যের ৭০-৮০ ভাগ বাজার চলে গেছে চীন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার দখলে। এমনকি তেজস্ক্রিয়তার কারণে দূর্ঘটনা অঞ্চলের ৩০০ কিলোমিটার দূরবর্তী কায়াসু কোম্পানীর উৎপাদিত দ্রব্যের বিক্রি কমে গেছে দুই-তৃতীয়াংশ। ফুকুশিমা দূর্ঘটনার দুই বছর পর ২০১৩ এর জুন মাসে ওই অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ পানিতে উচ্চমাত্রার তেজস্ক্রিয় পদার্থ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে জাপানের প্রখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী মিশিও কাকু বলেন, ফুকুশিমা দূর্ঘটনা পরবর্তী ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নেই লাগবে অন্তত ৫০ থেকে ১০০ বছর। তাই ফুকুশিমা ট্র্যাজেডির প্রকৃত ক্ষতির ন্যূনতম ধারণা পেতেও আমাদের অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েক দশক।

নীতি-নির্ধারণী মহল রূপপুর প্রকল্পে রাশিয়ান প্রযুক্তি আমদানীর গর্বে যখন খুশীতে আত্মহারা তখন পারমাণবিক বিদ্যুতের কদর্য রূপ আর রাশিয়ার তথ্য গোপনের সংস্কৃতিতে আমাদের সামনে শুধুই আসন্ন সংকটের কালো ছায়া।

রূপপুরে ৭  মাত্রার কোন দূর্ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কমপক্ষে ৫০ লক্ষ মানুষ। এই ৫০ লক্ষ জন হয়তো শাসকগোষ্ঠীর কাছে মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩ ভাগ। তাই বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষার ধোয়া তুলে ক্ষুদ্রতর এই ৩ ভাগের বলি দিতে নীতিনির্ধারকেরা হয়তো কুন্ঠা বোধ করবেন না।

কিন্তু জীবনকে যারা সংখ্যা দিয়ে বিচার করেন, প্রযুক্তিকে যারা অন্ধভাবে পূজা করেন তাদের অজ্ঞতার বলি হবে লক্ষ লক্ষ প্রাণ, ধবংস হয়ে যাবে সামাজিক আর অর্থনৈতিক অবকাঠামো- এটা ভাবতেই গা শিউরে ওঠে।

 

তথ্যসূত্রঃ

AP (2000). Worst effects of Chernobyl to come. Associated Press 25 April 2000 (//www.209.85.135.104/search?q=cache:EN91goYTe_gJ: www.scorched3d.co.uk/phpBB3/viewtopic.php%3Ff%3D12%

26t%3D5256%26st%3D0%26sk%3Dt%26sd%3Da+Kofi+Annan+million+children+demanding+

treatment+Chernobyl+2016&hl=ru&ct=clnk&cd=18&gl=ru).

Aleksakhin, R. M., Bagdevich, I. M., Fesenko, S. V., Sanzheva, N. I., Ageets, V. Yu. & Kashparov, V.A. (2006). Role of protective measures in rehabilitation of contaminated territories. International Conference. Chernobyl 20 Years After: Strategy for Recovering and Sustainable Development of Affected Territories. April 19–21, 2006, Minsk, Belarus (Materials, Minsk): pp. 103–108.

Alexey V. Y., Vassily B. N., Alexey V. N. (2009), Chernobyl: Consequences of the Catastrophe for People and the Environment

Khudoley V. V., Blokov I. P., Sadovnichik T. & Bysaro, S. (2006). Attempt to estimate the consequences of Chernobyl catastrophe for population living in the radiation-contaminated territories of Russia. In: Blokov, I. P. (Ed.), Consequences of the Chernobyl Accident: Estimation and Prognosis of Additional Mortality and Cancer Diseases (Center for Independent Environmental Assessment, Greenpeace-Russia, Moscow): pp. 3–19.

RADNET (2008). Information about source points of anthropogenic radioactivity: A Freedom of Nuclear Information Resource. The Davidson Museum, Center for Biological Monitoring (//www.davistownmuseum.org/cbm/Rad12.html)

Rahman D., Riasad A., Sakhawat N. & Zubaer C. (2011). A Study On Nuclear Energy: Sustainable

Solution For Ensuring Energy Security Or Emerging Future Threat, International Journal on Current Research & Review, pp. 6-14.

Malko, M. V. (2007). Assessment of Chernobyl medical consequences accident. In: Blokov, I., Sadownichik,T., Labunska, I. & Volkov, I. (Eds.), The Health Effects on the Human Victims of the Chernobyl Catastrophe (Greenpeace International, Amsterdam): pp. 194– 235.

Matin A. (2012), Rooppur & The Power Crisis

WHO (1959). Resolution World Health Assembly. Rez WHA 12–40, Art. 3, §1(//www.resosol.

org/InfoNuc/IN_DI.OMS_AIEA.htm).

Letter of the USSR’s First Deputy Minister of Public Health O. Shchepin, May 21, 1986, # 02–6/83–6 to Ukrainian Ministry of Public Health (cit. by V. Boreiko, 1996, pp. 123–124).]