![](https://ncbd.org/wp-content/themes/ncbd_tapon/images/corner-cap.png)
Monday, November 19th, 2012
আলোচনা সভায় বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ: রামপাল বিদ্যুৎ প্লান্ট সুন্দরবন ধ্বংসকারী ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী
রামপাল বিদ্যুৎ প্লান্ট নিয়ে অনুষ্ঠিত “রামপালে বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট স্থাপন ও ভারতের মুনাফার বলি সুন্দর বন- জাতীয় স্বার্থে আমাদের করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা কয়লাভিত্তিক এই প্রকল্পে সুন্দরবন ধ্বংসকারী ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করে- এ প্রকল্প বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।
বক্তারা বলেন, সরকার কম মূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ না করে বিদ্যুৎ সংকটকে জিম্মি করে রেন্টাল-কুইক রেন্টাল-এর পর এই জাতীয় স্বার্থবিরোধী বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। গত ১৮ নভেম্বর বিকাল সাড়ে ৩টায় পুরানা পল্টনস্থ মুক্তিভবনের প্রগতি সম্মেলন কক্ষে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপার সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল মতিন, রাজনীতিক বিমল বিশ্বাস, রুহিন হোসেন প্রিন্স, বজলুর রশীদ ফিরোজ, রাগীব আহমেদ মুন্না, বাগেরহাট উন্নয়ন ফোরামের ব্যারিষ্টার জাকির হোসেন, সেভ দ্যা সুন্দরবনের এ্যাড. মোজাহিদুল ইসলাম, বাগেরহাট জেলা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক রণজিৎ চট্টোপাধ্যায়, পানি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, রাজনীতিক জোনায়েদ সাকী, মোশারেফ হোসেন নান্নু, বহ্নিশিখা জামালী, আব্দুস সাত্তার, মোশাহিদ আহমেদ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, এমনিতে পরিবেশ দূষণ, লবনাক্ততা, জলবায়ু পরিবর্তন, বন কেটে ধ্বংস করা সহ নানা কারণে দেশের প্রাকৃতিক ঐতিহ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের রক্ষাকবচ সুন্দরবন বিপদের মুখে। এরপর মাত্র ৯ কি.মি. দূরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে, এর মাধ্যমে বায়ু-পানি-কঠিন-তরল যত ধরনের দূষণ ঘটতে পারে তার সবটুকুই সরাসরি সুন্দরবনকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে।
বক্তারা পিডিবি ও ভারতের এনটিপিসি’র সাথে সমঝোতা চুক্তি তুলে ধরে বলেন, ঐ চুক্তি অনুযায়ী দেশের স্বার্থতো রক্ষা হবেই না বরং বিদ্যুৎ কিনতে হবে প্রতি ইউনিট কমপক্ষে ৯ টাকায়। বক্তারা বলেন, পরিবেশগত সমীক্ষার ন্যূনতম শর্ত ভঙ্গ করে জোরপূর্বক মানুষ উচ্ছেদ-জমি দখল করে ভারতের কোম্পানিকে সুবিধা দিয়ে সুন্দরবন ধ্বংস ও দেশের সর্বনাশ করে ভারতীয় কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার বিরুদ্ধে ঐ অঞ্চলের মানুষকে কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না। সভা-সমাবেশের অনুমতি মিলছে না। হামলা-মামলা আর হুমকি দিয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, স্থানীয় জনসাধারণকে মাস্তান বাহিনী দিয়ে উচ্ছেদ করে ঐ অঞ্চলে প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে। ভুয়া নাম দেখিয়ে অনেকে ক্ষতিপূরণের টাকা নিচ্ছে- এসব সাজানো ঘটনা। বক্তারা প্রশ্ন করেন ‘প্রাথমিক পরিবেশগত সমীক্ষায়’ বিকল্প জায়গা হিসেবে লবন চেরা’র কথা বলা হলেও সরকার কেন ঐ স্থান নির্বাচন করলো না ?
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, এই প্রকল্পের জন্য এখনও পরিবেশগত ছাড়পত্র না পেলেও সরকার পরিবেশ অধিদপ্তরের ওপর চাপ সৃষ্টি করে অনুমোদন নিতে চাইছে। বক্তারা সুন্দরবন ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় আন্দোলনকারী সংগঠন ও ব্যক্তিসমূহকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন পরিচালনার আহ্বান জানান।
সভায় সুন্দরবন রক্ষায় জাতীয় আন্দোলন গড়ে তুলতে অচিরেই উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়।