Wednesday, August 26th, 2020
ফুলবাড়ি শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন
ফুলবাড়ির শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত সভায় অবিলম্বে ফুলবাড়ি চুক্তির পূর্ণবাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে ।
আজ ২৬ আগস্ট সকাল ১১ টায় ফুলবাড়ি আন্দোলনের শহীদ তরিকুল, সালেহীন, আল-আমিন স্মরণে জাতীয় কমিটি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এরপর অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মাদ ও জাতীয় কমিটির সংগঠক রুহিন হোসেন প্রিন্স। জাতীয় কমিটির সংগঠক বজলুর রশীদ ফিরোজ, সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকী ,অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার,শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, মানস নন্দী, শহিদুল ইসলাম সবুজ, নুজরাত মনিষা, মাহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন, রেজাউল করিম, মাসুদ খান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ফুলবাড়ি আন্দোলনে বাধ্য হয়ে ঐ সময়ের সরকার চুক্তি করতে বাধ্য হয়েছিল। ঐ সময় বিরোধী দলের নেত্রী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ‘ঐ চুক্তি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে বলেছিলেন, চুক্তি না মানার পরিণতি হবে ভয়াবহ।’ কিন্তু দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলেও আজও চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি। বরং সরকার বিদেশি কোম্পানিকে দিয়ে ঐ অঞ্চলে উন্মুক্ত খনি করার চক্রান্ত চলছে। জনগন এই চক্রান্ত মেনে নেবে না ।
তিনি বলেন, ফুলবাড়ি আন্দোলনের বার্তা ছিল, প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প করা যাবে না। আজ মহামারিতে বিশ্বময় এই বার্তায়ই ছড়িয়ে পড়েছে। সারাবিশ্বের জনমতও সেই বার্তা দিচ্ছে।
তিনি অবিলম্বে ফুলবাড়ি, রামপাল, রূপপুযর, মাতারবাড়িসহ প্রকৃতি-পরিবেশ বিনাশি প্রকল্প বাতিল করে ঐ অর্থ সার্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।
তিনি দেশের সব উন্নয়ন প্রকল্প ‘নির্ধারণে প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা করে উন্নয়ন’ ও ‘জনস্বার্থে উন্নয়ন’ ধারা নির্ধারণের আহ্বান জানান। তিনি ফুলবাড়ী আন্দোলনের পথ ধরে গনতন্ত্র ও দেশ বাচানোর সংগ্রাম গড়ে তোলারও আহ্বান জানান ।
সমাবেশ থেকে এশিয়া এনার্জি (জিসিএম) কে দেশ থেকে বহিস্কার, ফুলবাড়ি চুক্তির পূর্ণবাস্তবায়ন ও নেতৃবৃন্দের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যঅহার, উত্তরবঙ্গসহ সারাদেশে সুলভমূল্য গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ, প্রাণ বিনাশি প্রকল্প বাতিল করে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানানো হয়।
সভায় ফুলবাড়ির শহীদদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আজ ২৬ আগস্ট রাত ৮টায় ফুলবাড়ি দিবস উপলক্ষে অনলাইন আলোচনা সভা হবে। ঐ সভায় ফুলবাড়ি, লন্ডন, ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের জাতীয় কমিটির সংগঠক ও বিশেষজ্ঞবৃন্দ যোগ দেবেন।
ফুলবাড়িসহ দেশের সর্বত্র যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালিত হয়।
উল্লেখ্য ২০০৬ সালে দিনাজপুরের ফুলবাড়িতে জাতীয় সম্পদ রক্ষায় আন্দোলনরত জনতার উপর পুলিশ ও তৎকালীন বিডিআর গুলি চালায়। এতে ৩ জন শহীদ হন ও শতাধিক আহত হন। ৩০ আগস্ট সরকার আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নিয়ে চুক্তি করে। কিন্তু ঐ চুক্তি এখনও পূর্ণবাস্তবায়ন হয়নি।