?> রামপাল রূপপুর বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প নয়, দেশকে চিরস্থায়ীভাবে বিপর্যস্ত ও শৃঙ্খলিত করবার প্রকল্প। « NCBD – National Committee of Bangladesh

Thursday, April 26th, 2018

রামপাল রূপপুর বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প নয়, দেশকে চিরস্থায়ীভাবে বিপর্যস্ত ও শৃঙ্খলিত করবার প্রকল্প।

আজ ২৬ এপ্রিল বিকেলে ঢাকার মুক্তিভবনে জাতীয় কমিটির উদ্যোগে “রামপাল, রূপপুর এবং জাতীয় কমিটির বিকল্প প্রস্তাবনা” শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। আনু মুহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় রাজনীতিবিদ, লেখক, শিক্ষক, গবেষক, শিল্পী ও সাংবাদিকেরা অংশ নেন।

সভায় সরকারের বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা (পিএসএমপি ২০১৬) পর্যালোচনা করা হয় এবং জাতীয় কমিটির বিকল্প প্রস্তাবনা নিয়ে বিস্তৃত উপস্থাপনা করা হয়।

প্রকৌশলী মওদুদ রহমান আজ চেরনোবিলের ভয়াবহ দুর্ঘটনার ৩২ বর্ষ পূর্তি স্মরণ করে বলেন, পারমাণবিক দুর্ঘটনা অন্য কোন দুর্ঘটনার সাথে তুলনীয় নয়। এই দুর্ঘটনার ক্ষতি বছর, দশক, শতক পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। বাংলাদেশের রূপপুরে এই সব বিষয়ে ভয়াবহ ঝুকি আছে। সরকার ইতিমধ্যে দায়মুক্তি দিয়েছে কোম্পানিকে। লাভ হবে রাশিয়ার, ভারতের – বাংলাদেশের জন্য শুধুই ক্ষতি।

প্রকৌশলী মাহবুব সুমন বলেন, যে জমি ভুল কাজে পরে আছে, দখল হয়ে আছে, পতিত পড়ে আছে সেগুলো দিয়েই বাংলাদেশে বিপুল পরিমান সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগ আছে। প্রাণ প্রকৃতির অধিকার রক্ষায় নতুন উন্নয়ন ধারণা ও আইন কাঠামো দরকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান ব্যাখ্যা করে বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের জ্বালানী ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। গবেষক রাজনীতিবিদ আবুল হাসান রুবেল বলেন, যদি কোনো দুর্ঘটনা নাও হয়, তারপরও রূপপুর বাংলাদেশের নদী ও পানির ওপর যে ভয়ংকর চাপ তৈরি করবে তাতেই এটি গ্রহণযোগ্য নয়।

অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা বলেন, জাতীয় কমিটির বিকল্প প্রস্তাবনা উন্নয়নের বিভিন্ন জনপন্থী মডেলকে নির্দেশ করছে। শিল্পী অরুপ রাহী বলেন, রাষ্ট্র পুঁজির স্বার্থবাহী মুনাফামুখি উন্নয়ন মডেল-এর বিপরীতে জাতীয় কমিটির সুন্দরবনসহ প্রাণ প্রকৃতি রক্ষার আন্দোলন এবং নতুন চিন্তার প্রস্তাবনা নতুন ভবিষ্যৎ নির্মাণের দায়িত্ব পালন করছে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, নিপীড়ন-দায়মুক্তি-সন্ত্রাস দিয়ে সরকার সুন্দরবনসহ প্রাণ প্রকৃতিবিনাশী ঋণ নির্ভর মহা পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। ভয়ংকর পরিণতি থেকে দেশকে বাঁচাতে জাতীয় কমিটির ঋণ মুক্ত, প্রাণ প্রকৃতি বান্ধব, সুলভ পাল্টা মহা পরিকল্পনা নিয়ে জাতীয় জাগরন তৈরি করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, রামপাল রূপপুর বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প নয়, দেশকে চিরস্থায়ীভাবে বিপর্যস্ত ও শৃঙ্খলিত করবার প্রকল্প। আমরা রামপালে রূপপুরে প্রচারণার বড় বড় বিলবোর্ড দেখতে পাই। কিন্তু সঠিক কথা বলতে গেলে নিপীড়ন নির্যাতন। কান্ডজ্ঞান বিজ্ঞান সবই যা বলছে তার উল্টো কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী, প্রচার চালাচ্ছে সরকার।

মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, জাতীয় কমিটির নেতা আব্দুস সাত্তার, সাইফুল হক, লেখক রেহনুমা আহমেদ, শিল্পী অমল আকাশ, শিক্ষক ও গবেষক অদিতি হক, ব্যারিষ্টার জ্যোর্তিময় বড়–য়া, সাংবাদিক আনিস রায়হান, শাহেরিন আরাফাত, শিল্পী বীথি ঘোষ সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।