?> ‘সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ এবং রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সুন্দরবনবিনাশী সকল প্রকল্প বাতিলের দাবিতে ১৯ এপ্রিল সারাদেশে বিক্ষোভ দিবস পালন করুন’ « NCBD – National Committee of Bangladesh

Wednesday, April 18th, 2018

‘সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ এবং রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সুন্দরবনবিনাশী সকল প্রকল্প বাতিলের দাবিতে ১৯ এপ্রিল সারাদেশে বিক্ষোভ দিবস পালন করুন’

 

তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এবং সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আজ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আবারও সুন্দরবনের ভেতরে মোংলা সমুদ্রবন্দরের পশুর চ্যানেলে হাড়বাড়িয়া এলাকায় ৭৭৫ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে এমভি বিলাশ নামের একটি লাইটার জাহাজ গত ১৪ এপ্রিল রাতে ডুবে গেছে। বলা হয়েছে, পথে ডুবো চরে ধাক্কা লেগে এটি ডুবে যায়।’

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘গত কয়বছরে বারবার সুন্দরবনের ভেতরে কয়লাসহ ভয়াবহ দূষণ সৃষ্টিকারী পণ্যবাহী জাহাজ ডুবে সুন্দরবনের অপূরণীয় ক্ষতি করলেও সরকার তা রোধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বিকল্প পথে নৌ পরিবহনের প্রকল্প নিয়ে বিপুল অর্থব্যয় করা হয়েছে কিন্তু কোনো ফল আসেনি। এটা ধারণা করবার যুক্তি আছে যে, সুন্দরবনের গুরুত্ব বুঝতে সরকারের অনিচ্ছা বা অক্ষমতার কারণেই কার্যকর সিদ্ধান্ত ও তার বাস্তবায়নে ব্যর্থতা তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যখন অবিশ্বাস্যভাবে বলেন কয়লা দিয়ে পানি পরিষ্কার হয় তখন তা সরকারের যথাযথ কার্যকর ভূমিকা গ্রহণে শৈথিল্য সৃষ্টি করতে বাধ্য। উল্লেখ্য যে, সরকার গায়ের জোরে যে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র করছে তাতে প্রতিদিন ১০/১২ হাজার টন কয়লা এই পশুর নদী নিয়েই নেওয়া হবে। এর ভয়াবহতা চিন্তাও করা যায় না। সুন্দরবন ও প্রাণ প্রকৃতি পরিবেশ নিয়ে ন্যূনতম দায়বোধ থাকলে কোনো সরকার সুন্দরবনবিনাশী এসব তৎপরতায় লিপ্ত হতে পারে না।’

তাঁরা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশকে বাঁচায় যে সুন্দরবন তাকেই এই সরকার দেশি-বিদেশি লুন্ঠনকারী মুনাফাখোর ও দখলদারদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। ভারত সরকার সেদেশের বিধি ভঙ্গ করে (বনভূমির ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা যায় না) এখানে নির্মাণ করছে বিরাট ধ্বংসযজ্ঞের রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র। আর বাংলাদেশের সরকার দেশের পরিবেশ আইন ভঙ্গ করে সুন্দরবনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বলে চিহ্নিত ১০ কিলোমিটার সীমানার মধ্যে শতশত ভয়াবহ দূষণকারী প্রকল্প অনুমোদন করে বনগ্রাসী ভূমিগ্রাসী দস্যুদের হাতে তুলে দিচ্ছে বাংলাদেশের রক্ষাকবচ সুন্দরবন। তাদের সুবিধার্থে লাল বা ভয়ংকর পরিবেশ বিধ্বংসী প্রকল্পকে সবুজ প্রকল্প বলে ঘোষণা দেয়া হচ্ছে।’

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবন ধ্বংস মানে শুধু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয় নয়, প্রতিটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে লক্ষ লক্ষ মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া। তাই সুন্দরবন রক্ষার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ জাতীয় জাগরণ ছাড়া কোনো উপায় নাই। আমরা এবিষয়ে সরকারের ভূমিকার আশু পরিবর্তন দাবি করি এবং আগামী ১৯ এপ্রিল সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ এবং রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সুন্দরবনবিনাশী সকল প্রকল্প বাতিলের দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণের জন্য সবার প্রতি আহবান জানাই। ’