Monday, July 31st, 2017
একগুঁয়েমী, মিথ্যাচার, প্রতারণা বন্ধ করুন| সুন্দরবন বিনাশী রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করুন – জাতীয় কমিটি
তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এবং সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আজ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন:
ইউনেস্কো অধিবেশনের সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের মাধ্যমে সুন্দরবনবিনাশী রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সরকারের মিথ্যাচার, একগুঁয়েমী এবং প্রতারণার ন্যাক্কারজনক চিত্র স্পষ্ট হলো। জনগণের অর্থ খরচ করে দলেবলে ইউনেস্কোকে প্রভাবিত করবার একাধিক চেষ্টার পর সরকার থেকে বলা হয়, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন সম্পর্কে ইউনেস্কো তার আপত্তি প্রত্যাহার করেছে। কিন্তু ইউনেস্কোর প্রকাশিত সিদ্ধান্তে স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে (১) কৌশলগত পরিবেশগত সমীক্ষা (SEA) না হওয়া পর্যন্ত সুন্দরবন পাশ্ববর্তী এলাকায় কোন ধরনের শিল্প বানিজ্যিক স্থাপনা করা যাবে না। বলা বাহুল্য যে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র এ ধরনের স্থাপনার সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত। এবং (২) রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে ইউনেস্কো সমীক্ষা দলের সিদ্ধান্ত পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। এই সিদ্ধান্ত ছিল স্পষ্ট সুন্দরবন রক্ষার জন্য এই বিদ্যুৎকেন্দ্র অবশ্যই বন্ধ অথবা সুন্দরবন এলাকা থেকে সরাতে হবে।
আমরা আবারো সরকারের কাছে দাবি জানাই একগুঁয়েমী ত্যাগ করে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ, বিশেষজ্ঞ মত ও ক্রমবর্ধমান জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অবিলম্বে রামপাল চুক্তি বাতিলসহ সুন্দরবনবিনাশী বনগ্রাসী সব তৎপরতা বন্ধ করুন আর সেইসঙ্গে ‘সুন্দরবন নীতিমালা’ গ্রহণ করে এর বিকাশে সবধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করুন।
সংযুক্ত:
সুন্দরবন ও রামপাল নিয়ে ইউনেসকো আসলে কি বলেছে?
* কৌশলগত পরিবেশ সমীক্ষা বা স্ট্র্যাটেজিক এনভায়রনমেন্টাল অ্যাসেসমেন্ট সম্পন্ন হওয়ার আগে সুন্দরবন অঞ্চলে কোন ধরণের বৃহদাকার শিল্প ও অবকাঠামোগত প্রকল্পের কাজ না করার আহবান জানিয়েছে।(সিদ্ধান্ত:৪)
(..requests the State Party to ensure that any large-scale industrial and/or infrastructure developments will not be allowed to proceed before the SEA has been completed)
* সুন্দরবন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের উপর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সৃষ্ট বায়ু ও পানি দূষণ, বাড়তি জাহাজ চলাচল ও ড্রেজিং এর প্রভাব ইত্যাদি নিয়ে রিঅ্যাক্টিভ মনিটরিং মিশনের উদ্বেগগুলো উল্ল্যেখ করে স্ট্র্যাটেজিক এনভায়রনমেন্টাল অ্যাসেসমেন্টে এসব প্রভাব ভালোভাবে যাচাই করার আহবান জানিয়েছে(সিদ্ধান্ত: ১০)
(Also takes note of the mission’s concerns about the likely environmental impacts of the Rampal coal-fired power plant on the property arising from air and water pollution, a substantial increase in shipping and dredging, and additional removal of freshwater from an already increasingly saline environment and requests furthermore the State Party to ensure that these impacts are comprehensively assessed as part of the SEA …)
* ২০১৬ সালে ইউনেসকোর রিঅ্যাক্টিভ মনিটরিং মিশনের সকাল সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে
(Also requests the State Party to make constant efforts to fully implement all the other recommendations made by the 2016 Reactive Monitoring mission)
উল্ল্যেখ্য- ২০১৬ সালে ইউনেসকোর বিশেষজ্ঞদের দ্বারা গঠিত রিঅ্যাক্টিভ মনিটরিং মিশনের অন্যতম সুপারিশ ছিল রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করা।
[মনিটরিং মিশনের রেকমেন্ডেশান R2: it is recommended that the Rampal power plant project is cancelled and relocated to a more suitable location where it would not impact negatively on the Sundarbans Reserved Forest and the property. http://whc.unesco.org/document/148097]
*পশুর নদীতে ভবিষ্যতে কোন ড্রেজিং করার আগে পরিবেশগত সমীক্ষা বা ইআইএ করার আহবান পুনর্ব্যাক্ত করেছে (সিদ্ধান্ত: ৯)
(Reiterates its request to the State Party to undertake the Environmental Impact Assessment (EIA) for any future dredging of the Passur River..)
উল্ল্যেখ্য- রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা পরিবহনের জন্য পশুর নদীতে নিয়মিত ড্রেজিং করতেই হবে।
ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ৪১তম সেশনের এই সিদ্ধান্তগুলোর বিস্তারিত দেখুন এখান থেকে (পৃষ্ঠা ১০৩):
http://whc.unesco.org/archive/2017/whc17-41com-18-en.pdf