?> হাসিনা-মোদির যৌথ ঘোষণার সমালোচনা- ১৪ জুন দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ « NCBD – National Committee of Bangladesh

Wednesday, June 10th, 2015

হাসিনা-মোদির যৌথ ঘোষণার সমালোচনা- ১৪ জুন দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালে সুন্দরবনধ্বংসী রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র অব্যাহত রাখা, দায়মুক্তি আইন ব্যবহার করে অস্বচ্ছতার সঙ্গে বিদ্যুৎ খাতে রিলায়্যান্সের ও আদানির বিনিয়োগ অনুমোদন এবং ভারতকে চট্রগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমোদন বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ।

৯ জুন গ্রীণ রোডের জাহানারা গার্ডেনে জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে তার নিজ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন- অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, নুর মোহাম্মদ, প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা, রুহিন হোসেন প্রিন্স, শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, এড. আবদুস সালাম, মোশারফ হোসেন নান্নু, মোশরেফা মিশু, আজিজুর রহমান, খালেকুজ্জামান লিপন, ফখরুদ্দীন কবির আতিক, জাহাঙ্গীর আলম ফজলু, সুবল সরকার, মিজানুর রহমান, কিশোর রায়, মাসুদ খান, শহীদুল ইসলাম সবুজ, প্রমুখ।

সভায় রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ ঘোষণার সমালোচনা করে বলা হয়, সুন্দরবনের পাশে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে দেশের ভিতরে প্রবল জনমত উপেক্ষা করে দুইদেশের সরকার রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ এগিয়ে নিয়ে চলেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সকল বিধি মেনে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কথা বলেছেন অথচ ভারতের আইনে প্রাকৃতিক বনাঞ্চলের ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা যায় না। ভারতের প্রচলিত আইন ও আন্তর্জাতিক সকল বিধিবিধান অমান্য করে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন ধ্বংস করবার এই প্রকল্পকাজ চলছে। সভায় অবিলম্বে এই প্রকল্প বাতিলের জন্য ভারত ও বাংলাদেশের সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়। নাহলে দু’দেশের জনগণের যৌথ প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।

উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বিদ্যুৎ খাত ক্রমশ দেশী-বিদেশী বেসরকারী কোম্পানীর হাতে তুলে দেয়ার সমালোচনা করে নরেন্দ্র মোদির সফরের সময় ভারতীয় কোম্পানী রিলায়্যান্সের ৩ হাজার মেগাওয়াট এবং আদানি গ্রুপের ১ হাজার ৬ শত মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিনিয়োগের সমঝোতা চুক্তির ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সভা থেকে বিশেষ জ্বালানী (দায়মুক্তি) আইনের আওতায় আন্তর্জাতিক টেন্ডার ছাড়াই রিলায়্যান্স ও আদানির চুক্তিকে জাতীয় স্বার্থ বিরোধী বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়। এর ফলে দেশের বিদ্যুৎ খাত মুনাফামুখি খাতে পরিণত হচ্ছে, বিদ্যুৎসহ অর্থনীতি বিদেশিদের কাছে জিম্মি হয়ে যাচ্ছে এবং বিদ্যুতের দামও জনগণের সামর্থ্যরে বাইরে চলে যাবে।

সভায় চট্রগ্রাম ও মংলা বন্দর ভারতকে ব্যবহার করতে দেয়ার বিষয়ে সমঝোতা চুক্তির সমালোচনা করে বলা হয়, বন্দরের সামর্থ্য ও সক্ষমতা বিষয়ে পর্যাপ্ত আলাপ-আলোচনা ও পরীক্ষ-নিরীক্ষা ছাড়াই অস্বচ্ছভাবে এই চুক্তি করা হয়েছে। সভায় এই বিষয়ে বিস্তারিত জনগণকে অবহিত করবার দাবি জানিয়ে বলা হয় কৌশলগত প্রতিষ্ঠান হিসেবে বন্দরের ওপর জাতীয় মালিকানা ও কর্তৃত্ব নিশ্চিত করা জাতীয় নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।

সভায় আগামী ১৪ জুন মাগুড়ছড়া দিবসে সুন্দরবনধ্বংসী রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল এবং মাগুড়ছড়া ও টেংরাটিলা ধ্বংসযজ্ঞের জন্য দায়ী শেভ্রন ও নাইকোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়সহ ৭ দফা দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি সফল করবার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানানো হয়। ঢাকায় ঐদিন বিকাল ৪টায় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।