?> মোদী-হাসিনা’র প্রতি জাতীয় কমিটি: সুন্দরবনধ্বংসী বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের ঘোষণা দিন « NCBD – National Committee of Bangladesh

Thursday, May 21st, 2015

মোদী-হাসিনা’র প্রতি জাতীয় কমিটি: সুন্দরবনধ্বংসী বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের ঘোষণা দিন

তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সমাবেশে নেতৃবৃন্দ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী’র বাংলাদেশ সফরের সময় সুন্দরবনধ্বংসী বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল ও সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দেওয়ার জন্য ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

২১ মে ২০১৫, বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে “সুন্দরবনধ্বংসী রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সকল অপতৎপরতা বন্ধ, জ্বালানী সম্পদের শতভাগ দেশের কাজে নিয়োগ, বাপেক্স-পেট্রোবাংলাকে পঙ্গু করে বিদেশিদের হাতে তেল-গ্যাস সম্পদ তুলে দেওয়ার চক্রান্ত বন্ধ এবং খনিজ সম্পদ রফতানি নিষিদ্ধ করা সহ জাতীয় কমিটির ৭ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে” অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ। বক্তব্য রাখেন জাতীয় সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মাদ, বিশিষ্ট লেখক সৈয়দ আবুল মাকসুদ, প্রকৌশলী ম ইনামুল হক, প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা, রুহিন হোসেন প্রিন্স ও সাইফুল হক। বজলুর রশীদ ফিরোজ, জোনায়েদ সাকী, শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, সিদ্দিকুর রহমান, কামরুল আহসান, মোশরেফা মিশু, মোশারফ হোসেন নান্নু, সাজ্জাদ জহির চন্দন, রাজেকুজ্জামান রতন, আজিজুর রহমান, বহ্নি শিখা জামালী, মহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন, মীর মোফাজ্জেল মোস্তাক, সামছুল আলম, সুবল সরকার প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

২১ মে দাবি সমাবেশ শেষে জাতীয় কমিটির মিছিল। ছবি- শহীদুল ইসলাম সবুজ।

 

সমাবেশে প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ বলেন জনগণের সম্পদ রক্ষায় জনগণকেই জেগে উঠতে হবে। তিনি সুন্দরবনধ্বংসের সরকারি অপতৎপরতার নিন্দা জানিয়ে বলেন দেশের জনগণই সুন্দরবন ও জাতীয় সম্পদ রক্ষা করবে। এজন্য আমরা অতীতের মত আগামী দিনেও জনগণকে সাথে নিয়ে বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তুলব। সমাবেশে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে অর্জিত সংবিধানে দেশের সব সম্পদের মালিকানা জনগণকে দেওয়া হয়েছে। অথচ সরকার এবং পার্লামেন্টের এমপিরা সংবিধানের এই নির্দেশ রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তাদের হাত দিয়েই সুন্দরবনধ্বংস, গ্যাস লুটপাট ও জ্বালানী নিরাপত্তা বিঘিœত হচ্ছে। তিনি বলেন এই জন্য বর্তমান ও অতীতের সরকারগুলোকে জনগণের সামনে জবাবদিহী করতে হবে।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মাদ বলেন দেশের সর্বস্তরের মানুষের মতামতকে উপেক্ষা করে সরকার সুন্দরবন ধ্বংসের বিদ্যুৎ প্রকল্প এগিয়ে নিচ্ছে। এছাড়াও সুন্দরবন ধ্বংসে আরও বিদ্যুৎ প্রকল্প, শীপইয়ার্ড, সাইলো, সিমেন্ট কারখানা নির্মাণ করা হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না। তিনি বলেন ভারতীয় আইনেও সুন্দরবনের এত কাছে কোনো বিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমতি পাওয়া অসম্ভব ছিল। তিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন বাংলাদেশ সফরের সময় সুন্দরবনধ্বংসী বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার জন্য দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন আমরা অনেক দিন ধরে বিদ্যুৎ, গ্যাস সমস্যা সমাধানে ৭ দফা বিকল্প কর্মসূচি তুলে ধরেছি। অথচ সরকার এসব দাবি বাস্তবায়ন না করে আমাদের উন্নয়নবিরোধী বলে বিষদাগার করে চলেছে। তিনি সম্প্রতি স্থলভাগের গ্যাস ব্লক বিদেশী কোম্পানীকে ইজারা দেওয়ার বিরোধীতা করে বলেন দেশীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স-পেট্রোবাংলাকে পঙ্গু করে দেশের সম্পদ বিদেশীদের দেওয়ার যেকোন চক্রান্ত দেশবাসী রুখে দাড়াবে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন দেশী-বিদেশী লুটেরা গোষ্ঠী আমাদের জাতীয় সম্পদ লুটপাটে সবসময় চক্রান্ত করে থাকে। যখন যে সরকার আসে তার ঘাড়ে চড়ে এই চক্রান্ত বাস্তবায়ন করতে চায়। কিন্তু জনগণ রুখে দাড়ালে তারা পালাবার পথ খোজে। বক্তারা জনগণকে আহ্বান জানিয়ে বলেন ঘরে ডাকাত পড়লে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ না করলে সর্বশান্ত হওয়া ছাড়া অন্য কোনো পথ থাকবে না।

সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল তোপখানা রোড ঘুরে পুরানা পল্টন মোড়ে এসে শেষ হয়।