Monday, December 22nd, 2014
‘টাকামুখী তৎপরতার দিকে না তাকিয়ে সুন্দরবনমুখী উন্নয়নের দিকে তাকালে সংকট সমাধান করা যাবে’
সুন্দরবন ধ্বংসকারী প্রকল্প বাতিল না হলে আন্দোলনের কঠোর কর্মসূচি দেবে জাতীয় কমিটি
বনজীবিদের ক্ষতিপূরণ, নৌচলাচল বন্ধ, দ্রুত তেল নিষ্কাশনের দাবি
‘টাকামুখী তৎপরতার দিকে না তাকিয়ে সুন্দরবনমুখী উন্নয়নের দিকে তাকালে সংকট সমাধান করা যাবে’
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত সমাবেশে সুন্দরবনের বনজীবিদের ক্ষতিপূরণ, শ্যালো নদীতে নৌচলাচল বন্ধ ও দ্রুত তেল ও সুন্দরবন ধ্বংসকারী বিদ্যুৎসহ অন্যান্য প্রকল্প বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে। এসব দাবি বাস্তবায়িত না হলে আন্দোলনের কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুশিয়ারী দিয়েছে জাতীয় কমিটি।
সুন্দরবনে তেলবাহী জাহাজডুবির ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার সমম্বিত উদ্যোগ,মৎসজীবী-বনজীবিদের ক্ষতিপূরণ প্রদান, শ্যালো ও পশুর নদীতে সুন্দরবনের জন্য হুমকিস্বরূপ নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ করা, সুন্দরবনধ্বংসী কয়লা ভিত্তিক বিদুৎ প্রকল্পসহ সবরকম ক্ষতিকর ব্যবসায়িক প্রকল্প বাতিল, বঙ্গোপসাগরের সম্পদ যুক্তরাষ্ট্র ভারত চীন রাশিয়াসহ বিদেশী বেনিয়াদের হাতে তুলে দেয়ার প্রক্রিয়া বন্ধসহ জাতীয় কমিটির ৭ দফা দাবিতে আজ বিকেল ৩:৩০ মিনিটে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় কমিটির আহবায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্’র সভাপতিত্ত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান ও রুহিন হোসেন প্রিন্স। প্রকৌশলী ম.ইনামুল হক, বজলুর রশিদ ফিরোজ, নুরুল হাসান, সাইফুল হক, সুভ্রাংশু চক্রবর্তী, জোনায়েদ সাকী, মোশরেফা মিশু, মোশার্রেফ হোসেন নান্নু, শামশুল আলম, মীর মোফাজ্জেল মোস্তাক, সুবল সরকার প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, জনস্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে এরা লুটেরাদের স্বার্থ রক্ষা করছে। আন্দোলন ছাড়া এদের বিরত করা যাবেনা। তিনি দেশবাসীকে সুন্দরবন রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, শ্যালো নদী দিয়ে নৌচলাচল বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করার আলামত দেখা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও শক্তিশালী দেশী-বিদেশী লুটেরা চক্র। এরা সুন্দরবনের জমি থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু গ্রাস করে চলেছে। তিনি বলেন, টাকামুখী তৎপরতার দিকে না তাকিয়ে সুন্দরবনমুখী উন্নয়নের দিকে তাকালে সংকট সমাধান করা যাবে। তিনি তেলের ট্যাংকার ডুবে যাওয়ার পরপর যথাযথ উদ্যোগ না নেয়ার সমালোচনা করে বলেন, সুন্দরবন রক্ষায় এখনই সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সকল প্রকল্প বাতিল করতে হবে।
অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন বলেন, নৌ মন্ত্রনালয়, বন মন্ত্রনালয় দায়িত্ব পালনে ব্যার্থ। এরা প্রকৃত তথ্য আড়াল করতে ব্যস্ত। তিনি এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা উল্লেখ করে জরুরী চিকিৎসা তৎপরতার আহবান জানান।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, সরকারের আতœঘাতী উন্নয়নের ফল হলো তেলবাহী জাহাজ ডুবে যাওয়া। এই তথাকথিত উন্নয়ন তৎপরতা অব্যাহত থাকলে সুন্দরবন ধ্বংস হবে। তিনি বলেন, সুন্দরবন ঐ অঞ্চলের মানুষকে সিডর-আইলার বিরাট ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বাঁচিয়েছে। আজ সুন্দরবনকে বাঁচানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তিনি ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন।
সমাবেশ শেষে শত-শত মানুষের বিক্ষোভ মিছিল নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। দেশের বিভিন্ন স্থানেও আজ জাতীয় কমিটির উদ্যোগে সুন্দরবন রক্ষায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।