?> সমুদ্র সম্পদে ‘আকর্ষণীয় প্যাকেজ’ « NCBD – National Committee of Bangladesh

Sunday, July 20th, 2014

সমুদ্র সম্পদে ‘আকর্ষণীয় প্যাকেজ’

গত ৭ জুলাই আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর বাংলাদেশের সমুদ্র সীমা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি পরিষ্কার চিত্র পেয়েছে। এর ফলে এই নির্দিষ্ট সীমার ভেতর বাংলাদেশ জাতীয় নিরাপত্তা ও জাতীয় সম্পদ নিয়ে যথাযথ পরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহণে সক্ষম। কিন্তু কাগজে কলমে জমির মালিক হলেও বাংলাদেশের বহু মানুষ যেমন প্রবল ক্ষমতাধর দখলদারদের জন্য সেই জমি নিজের দখলে রাখতে পারেন না, বা তা নিজের অবস্থা উন্নয়নে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হন, তেমনি সমুদ্র সীমার উপর শুধুমাত্র বাংলাদেশের আইনগত স্বীকৃতি এই সমুদ্রক্ষেত্রে বাংলাদেশের কর্তৃত্ব এবং এই বিপুল সম্পদ দেশের মানুষের কাজে লাগানো নিশ্চিত করে না।

এই সংশয় এবং উদ্বেগ বাংলাদেশের সরকারগুলোর ভ’মিকা  থেকেই সৃষ্টি হয়। দক্ষিণ তালপ্িট্ট নিয়ে এখন নানা বাদানুবাদ হচ্ছে কিন্তু গত তিন দশকে কোন সরকারই এই দ্বীপের ওপর বাংলাদেশের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য উদ্যোগ, গবেষণা, সংলাপ, আদালত কোনকিছুই করেনি। এখন ক্রমে পরিষ্কার হচ্ছে এই অমনোযোগ ও নির্লিপ্ততার জন্য বাংলাদেশ কত ঝুঁকির মুখে পড়েছিলো, এবং সম্ভাব্য কত সম্পদ ও এলাকা থেকে বাংলাদেশ বঞ্চিত হলো।

২০১৩ সালের ২৬ নভেম্বর ভারতের ডিফেন্সফোরামইন্ডিয়াতে এরকম একটি খবর প্রকাশিত হয় যে, ভারত ২০০৬ সালেই হাড়িয়াভাঙার মুখের ৫০ কিমি দক্ষিণের খাড়িতে ১০০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে, যেটি বাংলাদেশ ভারতের বিরোধপূর্ণ এলাকা। একটি একক কেন্দ্রে এটি ভারতের সর্বোচ্চ মজুদ। এর আগে কৃষ্ণ গোদাবরী অববাহিকায় যে মজুত পাওয়া গিয়েছিল তার পরিমাণ জানা গিয়েছিলো ৫০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। গত বছরের ২৭ নভেম্বর ভারতের দৈনিক টেলিগ্রাফেও এই খবর প্রকাশিত হয়।

http://www.telegraphindia.com/1131127/jsp/nation/story_17616878.jsp#.U8TYGZSSzmt
এই খবরের পক্ষে ভারত সরকার বা কোন সংশ্লিষ্ট সংস্থার বক্তব্য না থাকায় এই খবরের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০০৭ সালেও কোন কোন সংবাদ মাধ্যমে এই খবর ছোট্ট আকারে প্রকাশিত হয়েছিলো। এই খবর নিয়ে রহস্য থাকলেও সমুদ্রসীমা নিষ্পত্তি রায়ের পর এই অঞ্চলে ভারতের দখল নিশ্চিত হওয়ায় সেদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ভারতের স্বস্তির কথা জানানো হয়েছে। ভারতের শীর্ষস্থানীয় টিভি চ্যানেল এনডিটিভি সরকারের গোপন নোট পর্যালোচনা করে এই এলাকায় মালিকানা অটুট থাকায় ভারত সরকারের স্বস্তির কথা বলা হয়েছে। এই খবরেও বলা হয়েছে এই অঞ্চলে বিপুল গ্যাস তেল সম্পদ আছে এবং তা কৃষ্ণ গোদাবরী মজুদের দ্বিগুণ।

http://www.ndtv.com/article/india/un-tribunal-resolves-40-year-old-maritime-dispute-between-india-and-bangladesh-557615

বাংলাদেশ কথিত দক্ষিণ তালপট্টি এবং ভারত কথিত নিউমুর এই এলাকাতেই অবস্থিত। অর্থাৎ বাংলাদেশ তার আদি দাবি অনুযায়ী যদি দক্ষিণ তালপট্টির ওপর তার মালিকানা রাখতে পারতো তাহলে এই কথিত গ্যাসসম্পদের মালিক হতো, যা বর্তমান প্রমাণিত মজুতের ১০ গুণ। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা বরাবর এই ছোট্ট দ্বীপ দক্ষিণ তালপট্টি আবিষ্কৃত হয় ১৯৭৪ সালে। এর পরপরই বাংলাদেশ এই দ্বীপের ওপর সার্বভৌম অধিকার দাবি করেছিলো। ১৯৭৯ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে এই বিষয়ে আলোচনা হয়। ১৯৮০ সালের ১৮ আগষ্ট ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বাংলাদেশ সফরের পর দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুক্ত বিবৃতিতে বলা হয়,  “হাড়িয়াভাঙা নদীর উপক’লে নতুন জেগে উঠা দ্বীপ (নিউমুর/দক্ষিণ তালপট্টি/পূর্বাশা) নিয়েও দুপক্ষের আলোচনা হয়েছে। দুপক্ষই এই মর্মে সম্মত হয়েছেন যে, দুই সরকারের মধ্যে আরও তথ্য বিশ্লেষন ও বিনিময়ের পর যথাশীঘ্র শান্তিপূর্ণভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য আরও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।”

(www.hcidhaka.gov.in/bi_doc/24.doc)
কিন্তু এই বিষয়ে পরে আর আলোচনার খবর পাওয়া যায় না। ১৯৮১ সালে ভারতের সেনাবাহিনী সেখানে ভারতের পতাকা উত্তোলন করে। বাংলাদেশের নৌবাহিনীও সেসময় খবর পেয়ে যে দ্বীপ পর্যন্ত যাবার চেষ্টা করেছিলো, তা বাংলাদেশ ভারত সমুদ্র সীমা নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা পালনকারী রিয়ার এডমিরাল (অব:) খুর্শেদ আলম জানিয়েছেন। তিনি নিজেই সেসময় নৌবাহিনীর কর্মকর্তা হিসেবে দ্বীপে যাবার চেষ্টা করে ভারতের অসম সামরিক আয়োজনের মুখে ব্যর্থ হন।

২০১০ সালে তালপট্টি বিলীন হওয়ার কথা জানা গেলেও সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার জেলেদের স্মৃতিতে দক্ষিণ তালপট্টি খুব ভালভাবেই আছে। ২০১০ সালের ৬ আগষ্ট প্রথম আলোর এক রিপোর্টে এক জেলে আজগর শেখের বরাত দিয়ে ইফতেখার মাহমুদ জানিয়েছেন, ‘তাঁর দুঃখ একটাই, দক্ষিণ তালপট্টি আর নেই। সমুদ্র থেকে উঠেছিল, সমুদ্রেই গেছে তলিয়ে। কেওড়াগাছের সারি, নানা পাখপাখলির অবাধ ওড়াউড়ির কথা মনে পড়ে তাঁর। ওইখানে গেলে সুন্দরবনের স্বাদ পেতেন তিনি।’

সেজন্যই সমুদ্র সীমা নিয়ে ভারতের সাথে আন্তর্জাতিক আদালতে নিষ্পত্তির সময় বাংলাদেশ দক্ষিণ তালপট্টি হারায়নি। হারিয়েছে বহু আগেই। ভারত এর উপর কর্তৃত্ব রেখেছে, এবং বাংলাদেশের কোন সরকারই এটা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেনি। এমনকি বাংলাদেশের কোন মানচিত্রেও দক্ষিণ তালপট্টিকে নিজেদের সীমায় দেখানো হয়নি। সমুদ্রসীমা নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে শুনানীর সময় তাই বাংলাদেশের অবস্থান ছিলো প্রমাণ করা যে, এই দ্বীপের কোন অস্তিত্ব নেই। আর ভারতের প্রতিনিধদল চেষ্টা করেছেন এটা প্রমাণ করতে যে, এই দ্বীপের অস্তিত্ব আছে। যদি ভারতীয় ভ’মি হিসেবে দ্বীপের অস্তিত্ব থাকতো তাহলে বাংলাদেশের আরও এলাকা ছেড়ে দিতে হতো। কারণ দ্বীপের ওপর মালিকানার সুবাদে সীমারেখা টানতে ভারতের জন্য বাড়তি সুবিধা নিশ্চিত হতো। আর এই দ্বীপ যদি বাংলাদেশের মালিকানায় থাকতো তাহলে বাংলাদেশ সমুদ্রের আরও বিশাল অঞ্চল নিজের দখলে আনতে পারতো।

তাহলে হেগে আন্তর্জাতিক আদালতে যে শুনানী হয়েছে এবং যে রায় হয়েছে সেটা কি আরও ভালো হতে পারতো? আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে হল কেন বাংলাদেশকে? দ্বিপাক্ষিক সংলাপে কেন ফয়সালা হলো না? রায়ের বিস্তারিত বিবরণ থেকেই তা স্পষ্ট হয়। আদালতে ভারত যে দাবিনামা উত্থাপন করেছিলো দ্বিপাক্ষিক সংলাপ হলে, অভিজ্ঞতা বলে, ভারতকে সেখান থেকে নড়ানো যেতো না। অভিন্ন নদী, সীমান্ত হত্যা, ট্রানজিট, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার অভিজ্ঞতা ভালো নয়। ভারত কখনোই বহুপাক্ষিক আলোচনায় উৎসাহী নয়, কোন ক্ষমতাধর রাষ্ট্রই সেটা পছন্দ করে না। একইকারণে তুলনামূলক দুর্বল রাষ্ট্রের জন্য দরকার বহুপাক্ষিক আলোচনা। দরকার আন্তর্জাতিক আইন ও ফোরামের সব সুযোগ সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করা। আমাদের দাবি থেকে ছাড় দিতে হয়েছে বেশ উল্লেখযোগ্য অংশ, ২০০ নটিক্যাল মাইলের পর বহিসমুদ্রে প্রবেশাধিকার সংকুচিত হয়েছে। তারপরও  নিজেদের দুর্বলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সমুদ্রসীমায় যতটুকু অর্জন করেছে তা সম্ভব হয়েছে শেষ মুহূর্তে প্রস্তুতি, খুর্শেদ আলম সহ কজন ব্যক্তির আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক আদালতের কারণেই। অভিন্ন নদী নিয়ে সমস্যা নিষ্পত্তির জন্যও আমাদের তাই আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী অগ্রসর হওয়া ছাড়া উপায় নেই। অথচ এখানেও প্রস্তুতিহীনতা ও উদ্যোগহীনতার সমস্যা প্রকট।

সমুদ্রসীমা নিষ্পত্তির পর সমুদ্র বিষয়ে মহাপরিকল্পনা, জাতীয় নিরাপত্তা ও সম্পদ উত্তোলনে জাতীয় সক্ষমতা বিকাশের কাজটিই গুরুত্বপূর্ণ। তা ছাড়া আইনগত কর্তৃত্ব কার্যকর কর্তৃত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে না। সমুদ্র মানে শুধু ব্লক নয়। যতোটা জানা তার চাইতে অনেক বেশি অজানা বিশাল সম্পদের আধার এই সমুদ্র। সমুদ্র সার্বভৌমত্বের অন্যতম ক্ষেত্র। এই সমুদ্র সীমায় বাংলাদেশের কর্তৃত্ব নিশ্চিত করা এবং সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগের কথা না বলে বিদেশি কোম্পানিকে কতটা ‘আকর্ষণীয় প্যাকেজ’ দেয়া যায় সেটা নিয়েই সরকারের মধ্যে তৎপরতা বেশি। ইতিমধ্যে ভারত, রাশিয়া, চীন, এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন তেল কোম্পানির লবিস্টরা ব্যতিব্যস্ত। তাদের উচ্চকন্ঠ আর অট্টহাসির মধ্যে বাংলাদেশের স্বার্থ নিয়ে কথা বলা ও শোনা কঠিন। মনে হচ্ছে এই সমুদ্রসীমা নিষ্পত্তি এসব কোম্পানিরই বিজয়। জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিদের কথা শুনলে ভ্রম হয়, আমরা কি বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানির জনসংযোগ কর্মকর্তার কথা শুনছি না কি এই দেশের মন্ত্রী, উপদেষ্টাদের কথা শুনছি?

খনিজ সম্পদ নিয়ে দুনিয়া জুড়ে কী হচ্ছে তা আমাদের জানতে হবে। খনিজ সম্পদ উত্তোলন নিয়ে নাইজেরিয়া, মায়ানমার একধরনের মডেল। এই দেশগুলোতে স্থলভাগ ও সমুদ্রে খনিজ সম্পদের পরিমাণ বাংলাদেশের চাইতে বহুগুণ বেশি। সেখানে বহুজাতিক কোম্পানির বিনিয়োগও বেশি, তাদের অনেক আকর্ষণীয় প্যাকেজ দিয়ে চুক্তি করা হয়েছে। তেল গ্যাস উত্তোলন ও রফতানির হারও বেশি। যে যে কাজ করলে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে বলে দেশি বিদেশি কোম্পানি লবিস্টরা বলে থাকেন তার সবই এই দেশগুলোতে করা হয়েছে। কিন্তু ফলাফল? এই দেশগুলোর দারিদ্র বাংলাদেশের চাইতে বেশি, শিক্ষা চিকিৎসায় বাংলাদেশের চাইতে পরিস্থিতি খারাপ, এমনকি লোডশেডিংও বাংলাদেশের চাইতে বেশি। কী হচ্ছে তাহলে এই দেশগুলোর বিশাল সম্পদ আর তা থেকে প্রাপ্ত অর্থ নিয়ে? বহুজাতিক কোম্পানির বিপুল মুনাফা হচ্ছে আর একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর হাতে জমা হচ্ছে কমিশন আর ঘুষের পাহাড়। আর এই ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য অব্যাহত আছে নিপীড়ন, সহিংসতা, স্বৈরশাসন।

অন্যদিকে মালয়েশিয়া, নরওয়ে আরেকধরনের মডেল। এই দেশগুলো বিদেশি কোম্পানির হাতে নির্বিচারে দেশের সম্পদ তুলে দেয়নি। জাতীয় সংস্থা ও সক্ষমতা বিকাশে গুরুত্ব দিয়েছে। বাংলাদেশের পেট্রোবাংলা প্রতিষ্ঠার সময়েই তাদের  সংস্থাগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এখন তারা আন্তর্জাতিক ভাবে পাল্লা দিচ্ছে। তাদের খনিজ সম্পদের অর্থ অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। নরওয়ে মডেলে তেল সম্পদ নিয়ে সকল উদ্যোগে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা এবং তা থেকে প্রাপ্ত অর্থ জনগণের জীবন মান উন্নয়নে ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। মানব উন্নয়ন সূচকে এবং পরিবেশ সূচকে নরওয়ে তাই বিশ্বের শীর্ষস্থানীয়।

গত তিনদশকে বাংলাদেশের নীতি নির্ধারকেরা নাইজেরিয়া মায়ানমার মডেল নিয়েই অগ্রসর হয়েছেন। জনপ্রতিরোধের কারণে পুরোপুরি সক্ষম হননি, কিন্তু অপচেষ্টা অব্যাহত আছে। অনেকগুলো চুক্তির বোঝা তো আছেই, তার উপর সমুদ্র ব্লক নিয়ে সরকার কিছুদিন আগেই ভারতের ওএনজিসির জন্য পিএসসি ২০১২ সংশোধন করে তাদের বিনিয়োগ ‘আকর্ষণীয়’ করেছেন। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, বাংলাদেশকে ওএনজিসির কাছ থেকে প্রায় আমদানি করা দামে নিজেদের গ্যাস কিনতে হবে। এই সংশোধনের পর মার্কিন কোম্পানি কনকো ফিলিপস অন্য দুটি ব্লকের জন্য পিএসসি ২০০৮ সংশোধন করে একই সুবিধার দাবি জানিয়েছে। (এসব চুক্তি নিয়ে আরও আলোচনার জন্য দেখুন: ‘কার সম্পদ কার হাতে’, প্রথম আলো, ২১ মে, ২০১৪)

এখন সমুদ্র বক্ষের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদেশি কোম্পানিগুলোর চাহিদামতো সুবিধা আরও আকর্ষণীয করে বিডিং করবার আয়োজন চলছে। মডেল হিসাবে সামনে আনা হচ্ছে মায়ানমারকে। এসব অপরাধ করবার সময় কর্মকর্তারা মুদ্রাদোষের মতো সারাক্ষণ বলতে থাকেন, ‘ওরা খুব দক্ষ’, ‘আমাদের কোন সক্ষমতা নাই’ ‘আমাদের পুঁজি নাই’! প্রশ্ন হলো, যারা সক্ষমতা তৈরি করতে ব্যর্থ তারা কেনো ক্ষমতায় থাকে? এই প্রশ্নের উত্তরও কখনো মেলে না যে, ‘দক্ষ’ ওএনজিসি যদি প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরের মাথায় সমুদ্রে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান ও উত্তোলনে দক্ষতা অর্জন করে বাংলাদেশ কেন ৪০ বছরেও তা পারে না? কমিশন আর ঘুষের পাহাড় কিছু মাথা কিনে নেয় বলে?

১৬ জুলাই ২০১৪