Thursday, July 12th, 2018
বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ
দেশে আরেকটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কক্সবাজারের মহেশখালিতে এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে উৎপাদিত হবে তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এটি এখন পর্যন্ত দেশে নির্মিতব্য যৌথভাবে সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি জেনারেল ইলেক্ট্রিক (জিই) যৌথভাবে ৪৪০ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ৩৬ হাজার ৮১৫ কোটি ব্যয়ে কেন্দ্রটি নির্মাণ করবে। এটি বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সরাসরি মার্কিন বিনিয়োগ।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে মহেশখালিতে তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি চালিত কেন্দ্র নির্মাণে সমঝোতা স্মারক সই হয়।
পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ এবং জেনারেল ইলেক্ট্রিক পাওয়ারের (জিই) প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সিইও) রাসেল স্টোকস সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, পিডিবি ও জিই মিলে গঠিত যৌথ কোম্পানি কেন্দ্রটি নির্মাণ ও পরিচালনা করবে। এতে পিডিবির ৫১ শতাংশ, জিই’র ৩০ শতাংশ এবং অন্য কৌশলগত বিনিয়োগকারির ১৯ শতাংশ অংশীদারিত্ব থাকবে।
এছাড়া গঠিতব্য কোম্পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মানে সম্ভাব্যতা যাচাই, পাঁচ হাজার ৬০০ একর ভূমি উন্নয়ন এবং এলএনজি টার্মিনাল নির্মান করবে। পিডিবি ভূমি ইজারা চুক্তি এবং বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করবে। অন্যদিকে জিই সম্ভাব্যতা যাচাই, কেন্দ্রের প্রকৌশল ও নকশা এবং প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করবে। এই কেন্দ্রে ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতায় তিনটি ইউনিট নির্মিত হবে। ভুমি অধিগ্রহন, উন্নয়ন ও সমীক্ষা শেষে কেন্দ্রটি নির্মাণে সময় লাগবে তিন বছর।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের গ্রাহকের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে মান সম্মত বিদ্যুৎ পৌছাতে হবে। তাই কেবল এলএনজি নয়, কয়লা ভিত্তিক প্রকল্পগুলো এগিয়ে নিতে হবে।’
তৌফিক-ই-ইলাহী আরও বলেন, ‘পরিত্যক্ত গ্যাস কূপগুলোতে কিভাবে এলএনজি রাখা যায় সেজন্য প্রযুক্তি ও প্রকৌশল উন্নত করতে হবে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করতে পারে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকার্ট বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্ক এই সমঝোতার মাধ্যেম আরও জোরালো হবে। এ দেশের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই সহায়ক ভূমিকা রাখতে চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশ ভারসাম্যপূর্ণভাবে উন্নতি করছে। এরই প্রতিফল হিসেবে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে নানাভাবে চেষ্টা করছে। জিইর সঙ্গে এই অংশীদারিত্ব সরকারের লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখবে।’ জিইর এ বিনিয়োগ বাংলাদেশে আমেরিকার সবচেয়ে বড় সরাসরি বিনিয়োগ বলেও অভিহিত করেন তিনি।
বিদ্যুৎ সচিব ড.আহমেদ কায়কাউস বলেন, ‘মহেশখালীতে জলবায়ুগত প্রতিকূলতার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই কেন্দ্রটি নির্মাণ করতে হবে।’
http://dainikamadershomoy.com/bangladesh/146824/