Wednesday, October 12th, 2016
বাঁশের খুঁটিতে বিদ্যুৎলাইন ঝুঁকিতে গ্রামবাসী
গ্রাম ফুঁড়ে চলা রাস্তা। রাস্তার ধার দিয়েই বাঁশের খুঁটি পুতে ঝোলানো হয়েছে বিদ্যুতের তার। তারের জটলার ভার সইতে না পেরে বাঁশগুলো হেলে পড়েছে। কোথাও বা হেলে থাকা বাঁশ ঠেকনা দেওয়া হয়েছে আরেকটি বাঁশ দিয়ে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাষ্টসাগরা গ্রামের অনেক বাড়িতে এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)।
গ্রামবাসী বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এর ফলে জীবন নিয়ে ঝুঁকির মধ্যেই চলাচল ও বসবাস করতে হচ্ছে তাঁদের। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের মধুপুর বাজার থেকে দক্ষিণের গ্রাম এই কাষ্টসাগরা। সরেজমিনে দেখা গেছে, এক কিলোমিটারের কিছু বেশি রাস্তাজুড়ে বসানো বাঁশের খুঁটিতে ভরসা করেই অর্ধশত বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। মূল লাইনটি যেখানে গিয়ে শেষ, সেখানে কংক্রিটের পোলে ঝোলানো হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগের ২৩টি মিটার। বাকি মিটারগুলো বসানো গ্রাহকদের বাড়িতে।
মধুপুর বাজার থেকে বিদ্যুৎ লাইন দক্ষিণে প্রায় ৩০০ গজ গিয়ে থেমে গেছে। এরপর ওই গ্রামের উত্তরপাড়া ও খাঁ পাড়ায় শতাধিক পরিবারের বাস। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুতের খুঁটির জন্য চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। কিন্তু খুঁটির ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হয়ে কর্তৃপক্ষ বাঁশ বসিয়ে সংযোগ দিয়েছে। গত পাঁচ-ছয় বছর এভাবেই চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যুৎ বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, ১০০ গজের বেশি দূরত্বে সার্ভিস লাইন দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। ১০০ গজের অতিরিক্ত দূরত্ব হলে অবশ্যই খুঁটি দিতে হবে, অন্যথায় সংযোগ দেওয়া যাবে না। অথচ এ গ্রামে এক কিলোমিটারের বেশি দূরে গিয়ে খুঁটি বসানো হয়েছে। মাঝের স্থানগুলোতে বসানো হয়েছে বাঁশের খুঁটি।
গ্রামটির ওই দুই পাড়ার শতাধিক পরিবারে বিদ্যুতের সংযোগের চাহিদা থাকলেও এভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করায় ঝুঁকির কথা বিবেচনায় অনেকে সংযোগ নেননি। তাই অর্ধশত বাড়িতে রয়েছে বিদ্যুতের সংযোগ। বছরের পর বছর বাকি পরিবারগুলো বঞ্চিত হয়ে চললেও খুঁটি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, গ্রামের কিছু বাড়িতে বিদ্যুৎ আছে, কিছু বাড়িতে নেই; এটা ভাবাই যায় না। এলাকার সবাই বিদ্যুৎ পাওয়ার চেষ্টা করেছে। কর্তৃপক্ষ অপেক্ষা করতে বলেছে। জানিয়েছে, দ্রুতই খুঁটি স্থাপন করা হবে। কিন্তু আজও হয়নি।
আমিরুল ইসলাম নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, তাঁরা জানেন এভাবে বিদ্যুৎ নেওয়াটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ, তবু কিছু করার নেই। ঝুঁকি নিয়েই বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওজোপাডিকোর ঝিনাইদহের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, সংযোগগুলো নানা সময় দেওয়া হয়েছে। গ্রামের মানুষের তদবিরে সংযোগগুলো দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। তবে ঝুঁকিমুক্ত করতে তাঁরা ওই স্থানে দ্রুত খুটি বসাবেন।