Wednesday, September 25th, 2013
‘ভিত্তিপ্রস্তর’ হলে প্রস্তরটাই থাকবে ভিত্তি টলে যাবে
ঢাকা থেকে সুন্দরবন যাবার পথে বুধবার সন্ধ্যায় ফরিদপুরে ফরিদপুরের জনসভায় জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ বলেন, জনমত উপেক্ষা না করে রামপালে বিদ্যুতকেন্দ্রের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের যে ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন হলে কেবল প্রস্তরটাই থাকবে, ভিত্তি টলে যাবে।” বুধবার সরকার রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র উদ্বোধনের তারিখ আগামী ২২ অক্টবর ঘোষণা করার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, “জনগণের ভয়ে তরিঘরি করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে মুনাফা আর ক্ষমতার লোভেই তারা এই চুক্তি করেছে।”
তিনি আরো বলেন, “২২ অক্টবরে যে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হবে সেটা সরকারের বেইমানীর সাক্ষি হয়ে থাকবে। এই ভিত্তই প্রস্তর সাক্ষি দেবে, টাকা আর ক্ষমতার লোভে আপনারা দেশ বিক্রি করেছেন। দেশের সাথে বেইমানি করেছেন। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ভিত্তই প্রস্তরের জন্যেই জনগণের কাছে করজোরে ক্ষমা চাইতে হবে।”
আনু মুহাম্মদ আরো বলেন, “তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে। তাদের চেতনা হল, দেশ বিক্রি করে ক্ষমতায় টিকে থাকা। মুক্তিযুদ্ধের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে বঙ্গপসাগরের গ্যাস, ক্ষনিজ সম্পদ, সুন্দরবন বিদেশিদের হাতে তুলে দিতে চায়।”
তিনি আরো বলেন, “এখন মুক্তিযুদ্ধের আসল চেতনা হল দেশের সম্পদ রক্ষা করা। এই চক্রান্তকারীদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা। স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়া।”
বুধবার ছিল লংমার্চের দ্বিতীয় দিন । বৃষ্টির মধ্যেও মানুষ দলে দলে সুন্দরবন রক্ষার লংমার্চে যোগ দিচ্ছে। রোদ বৃষ্টি ঝড় কোন কিছুই কাবু করতে পারেনি লংমার্চ যাত্রীদের।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে লংমার্চ বহর রাজবাড়ি ছেড়ে ফরিদপুর পৌঁছায়। পথে বর্ণাঢ্য তোরণ সাজিয়ে লংমার্চকে জেলায় স্বাগত জানানো হয়। পথের দুই পাশে জনতা সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে করতালিসহ লংমার্চের মিছিলকে স্বাগত জানায়। এসময় তারা সুন্দরবনে কয়লা বিদ্যুত প্রকল্প্রের নিরুদ্ধে স্লোগান দেয় এছাড়া জাতীয় কমিটির সদস্য সংগঠন গুলোর উদ্যোগে জেলাজুড়ে দেয়াল লিখন, পোস্টারিং করা হয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো রামপালে সুন্দরবন ধ্বংস করে নির্মাণ হতে যাওয়া বিদ্যুত কেন্দ্রে বিরুদ্ধে ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড লাগানো হয়েছে। লং মার্হের মিছিলটি ফরিদপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট পদক্ষীণ করে আম্বিকা মেমোরিয়াল হল মাঠে সমাবেশ করে। জেলা জাতীয় কমিটি ওই সমাবেশের আয়োজন করে।
জনসভায় লংমার্চে অংশ নেয়া সব সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পরিবেশবাদী ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা ও কর্মীরা অংশ নেয়।
এসব সংগঠনের মধ্যে আছে, সাংস্ক্রৃতিক সংগঠন উদিচী, সমগীত, চারণ, সংস্কৃতি মঞ্চ, বিবর্তন, পরিবেশবাদী সংগঠন, গ্রীন ভয়েস, পরিবেশ আন্দোলন বাংলাদেশ(বাপা), রাজনৈতিক সংগঠন গুলোর মদ্ধ্যেয়া আছে, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), গণসংহতি আন্দোলন, বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি, বাংলাদেশের ওয়ার্কারস পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ (ইউসিবিএল), গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, জাতীয় গণফ্রণ্ট, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা কমিটি, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, বাসদ (মাহবুব), সাম্যবাদী দল, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরাম, শ্রমজীবী সংঘ। এছাড়া বিভিন্ন ছাত্র গণ সংগঠন যেমন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সংস্কৃতি ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রণ্ট, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী সহ অনেকে এই সমাবেশে অংশ নেয়।
এছাড়া সভায় উপস্থিত ছিলেন, সিবিবির কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য রাগিব আহসান মুন্না, বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য শুভ্রাংসু চক্রবর্তি, গণ সংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বাসদের কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য বজলুর রশিদ ফিরোজ, রজেকুজ্জামান রতন, বিপ্লবি ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, সিবিবি প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহদাত হোসেন, জ্বালানী বিশেষজ্ঞ বিডি রহমতুল্লাহ, ইউসিবিএল স্বভাপতি মোশারফ হোসেন নানু, প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফাসহ অনেকে।