?> রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবন ধ্বংস করে বাংলাদেশকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাবনা ত্বরান্বিত করবে « NCBD – National Committee of Bangladesh

Saturday, July 6th, 2013

রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবন ধ্বংস করে বাংলাদেশকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাবনা ত্বরান্বিত করবে

‘রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবন ধ্বংস করে বাংলাদেশকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাবনা ত্বরান্বিত করবে। জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে মানুষের জীবন ও জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত করবে। কম সময়ে সারাদেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ জাতীয় কমিটির ৭ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সম্ভব। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল ও জাতীয় কমিটির ৭ দফা বাস্তবায়নে আগামী ২৪ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা-রামপাল (সুন্দরবন) লংমার্চ সফল করতে হবে।’

তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত ‘সুন্দরবন ধ্বংস করে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র চাই না। বিদ্যুৎ সংকট সমাধান কোন পথে?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

৫ জুলাই সকালে রাজধানীর মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন প্রকৌশলী বিডি রহমত উল্লাহ। বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা, প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা, রুহিন হোসেন প্রিন্স, মোজাম্মেল হক তারা, এ্যাড. আব্দুস সালাম, আমিনুল ইসলাম বাবুল ও প্রকৌশলী মউদুদুর রহমান। এ সময় শাহ আলম, বজলুর রশীদ ফিরোজ, আব্দুস সাত্তার, নজরুল ইসলাম, মীর মোফাজ্জেল হোসেন, শামসুল আলম, খান আসাদুজ্জামান মাসুম, জুলফিকার আলী, জাহাঙ্গীর আলম ফজলু, তৈমুর খান অপু, আনহা এফ খান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মূল বক্তব্যে প্রকৌশলী বিডি রহমত উল্লাহ বলেন, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিপুল যোগান আছে, যা পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে নেই। সৌর শক্তি, পানি, বায়ু, বর্জ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রয়োজনের কয়েকগুণ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। কিন্তু এদিকে না গিয়ে সুন্দরবন, পানি সম্পদ, আবাদী জমি ধ্বংস করে বিভিন্ন পরিবেশ দূষণের বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক পথ আছে, কিন্তু সুন্দরবনের কোন বিকল্প নেই। সুলভে জনস্বার্থে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পথে না গিয়ে জনগণের জীবন, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বিনষ্ট করে, দেশি-বিদেশি কতিপয় কোম্পানির স্বার্থে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। শতভাগ মালিকানা ও খনিজ সম্পদ রফতানি নিষিদ্ধ ও জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান সম্ভব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের লাভ-ক্ষতি বিশ্লেষণ করে দেখান যে, লাভ যতটুকু হবে তা ক্ষতির তুলনায় এত কম যে লাভটুকুও গ্রহণ করা সম্ভব হবে না। লাভ হবে শুধু দেশি-বিদেশি কোম্পানির।

প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা বলেন, ইআইএ না করে রামপালে জমি দখল ও মানুষ উচ্ছেদ করা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ইআইএ প্রত্যাখান করার পরও ভারতের সাথে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি করা হয়েছে। দেশের সর্বনাশ করে দেশি-বিদেশি কিছু গোষ্ঠীর স্বার্থেই এই প্রকল্প নেয়া হয়েছে।

রুহিন হোসেন প্রিন্স বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির সাথে জড়িতদের শাস্তি, রেন্টাল-কুইক রেন্টাল খাতের ব্যয়ের প্রকৃত চিত্র ও সম্প্রতি আইন না থাকলেও রাজধানীতে গ্যাস সংযোগ দেয়ার মাধ্যমে যে দুর্নীতি হয়েছে, তা তদন্ত করে তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানান।

মোজাম্মেল হক তারা রেন্টাল-কুইক রেন্টালের নামে অর্থনীতি সর্বনাশের তথ্য তুলে ধরে এসবের চুক্তি আর নবায়ন না করার আহ্বান জানান।

এ্যাড. আব্দুস সালাম জ্বালানি খাতে সকল অসম চুক্তি বাতিলের দাবি জানান। প্রকৌশলী মউদুদুর রহমান সুন্দরবন রক্ষায় দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।