?> গাজপ্রমের সাথে জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিল কর « NCBD – National Committee of Bangladesh

Thursday, January 30th, 2020

গাজপ্রমের সাথে জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিল কর

তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ ও সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আজ এক বিবৃতিতে বলেছেন- “আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে জানতে পেরেছি যে, গতকাল ২৯ জানুয়ারি দায়মুক্তি আইনের অধীনে সরকার আবারও জাতীয় স্বার্থবিরোধী সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে দেশের সম্পদে বিদেশি কোম্পানির অধিকতর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করছে, সেই সঙ্গে জাতীয় সংস্থা বাপেক্সকে আরও কোণঠাসা করার ব্যবস্থা করেছে। সর্বশেষ এই চুক্তির ব্যবস্থা হয়েছে রাশিয়ান কোম্পানি গাজপ্রমের সাথে। গাজপ্রমকে কোনো দরপত্র ছাড়া স্থল ও সমুদ্রের গ্যাসক্ষেত্র ইজারা দান এবং ভোলা গ্যাসক্ষেত্রে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মার্কিন বা কানাডীয় কোম্পানির মতো কোনো দুর্ঘটনা না ঘটিয়ে, পরিশ্রম করে জাতীয় সংস্থা বাপেক্সের দক্ষ কর্মী বিশেষজ্ঞরা ভোলায় যে গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছিলেন, ফল পাবার সময় তা বিনা দরপত্রে তুলে দেওয়া হচ্ছে রাশিয়ান কোম্পানি গাজপ্রমের হাতে। তারা বাপেক্স-এর চাইতে অধিক দক্ষতায়, কম ব্যয়ে গ্যাস উত্তোলন করতে পারে এরকম কোনো উদাহরণ নাই। বরং এর উল্টোটাই দেখা গেছে। গাজপ্রমকে এর আগেও অযৌক্তিকভাবে কাজ দেয়া হয়েছে, বাপেক্সের চাইতে দ্বিগুণ অর্থ খরচ করেও তারা কাজ সমাপ্ত করতে পারেনি, বরং গ্যাসক্ষেত্র ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। এবারের চুক্তিতে বাংলাদেশের অর্থ বেশি যাবে, বেশি দামে নিজেদের গ্যাস কিনতে হবে, গ্যাসক্ষেত্রও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। অথচ ভোলার এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে যথাযথভাবে গ্যাস উত্তোলন করলে দক্ষিণাঞ্চলে গ্যাস চাহিদা মেটানো সম্ভব, চীন-ভারত-জাপানের কয়লা বিদ্যুত প্রকল্পে দেশের সর্বনাশ না করে বিদ্যুৎও উৎপাদন সম্ভব।

আমরা এটাও লক্ষ্য করেছি যে, এসব জাতীয় স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্তকে বৈধতা দেবার জন্য বহুদিন থেকেই বাপেক্স-এর বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে, তার কাজে নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে, এই প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনভাবে বিকাশের পথে তৈরি করা হচ্ছে নানা জটিলতা। নিছক সাবকন্ট্রাক্টর নয়, একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাপেক্স-এর কাজের দক্ষতা আছে, অথচ তার সক্ষমতা বাড়ানোর বদলে সুপরিকল্পিতভাবে তাকে পঙ্গু বানানো হচ্ছে। আমরা মনে করি, ক্ষমতার খুঁটি যদি বাঁধা থাকে নানা জায়গায়, যদি কমিশনভোগীরা দেশ চালায় তাহলেই কেবল এরকম সিদ্ধান্ত হতে পারে।

আমরা অবিলম্বে এসব জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিল ও অপতৎপরতা বন্ধ এবং জাতীয় কমিটি প্রস্তাবিত সুলভ, স্বনির্ভর, পরিবেশবান্ধব পথে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানের দাবি জানাই। নাহলে ভোলামুখী পদযাত্রাসহ আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচি নিতে আমরা বাধ্য হবো।”