?> প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে খোলাচিঠি « NCBD – National Committee of Bangladesh

Thursday, July 28th, 2016

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে খোলাচিঠি

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সুন্দরবনবিনাশী ও দেশধ্বংসী সকল চুক্তি বাতিল এবং বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে ৭ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিলের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে খোলাচিঠি

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আপনি বিভিন্ন সময় বলেছেন,সুন্দরবনের পাশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কোনো ক্ষতি করবে না। আমরা আপনার অবগতির জন্য দেশ বিদেশের অভিজ্ঞতা এবং দেশে বিভিন্ন গবেষণা ও বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সারসংক্ষেপ নীচে পেশ করছি:

(১) কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বছরে ৪৭ লক্ষ ২০ হাজার টন কয়লা পুড়িয়ে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টন ফ্লাই অ্যাশ ও ২ লক্ষ টন বটম অ্যাশ উৎপাদিত হবে। এই ফ্লাই অ্যাশ, বটম অ্যাশ, তরল ঘনীভূত ছাই বা স্লারি ইত্যাদি ব্যাপক মাত্রায় পরিবেশ দূষণ করে কারণ এতে আর্সেনিক ও বিভিন্ন ভারী ধাতু যেমন পারদ, সীসা, নিকেল, ভ্যানাডিয়াম, বেরিলিয়াম, বেরিয়াম, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম, সেলেনিয়াম, রেডিয়াম মিশে থাকে।এর ফলে সুন্দরবনের পশুপাখি বৃক্ষ লতাপাতাসহ অসংখ্য প্রাণ এবং ইকো সিস্টেম ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে।(২) কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিষাক্ত সালফার ও নাইট্রোজেনের বিভিন্ন অক্সাইড গ্যাস নির্গমনের ফলে মানুষ গাছপালা জীবজন্তুর জীবন বিপন্ন হবে। (৩) সাড়ে চার বছর ধরে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কালে আমদানি করা কয়লাসহ নির্মাণের মালামাল ও যন্ত্রপাতি সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে নদী পথে পরিবহন করার সময় বাড়তি নৌযান চলাচল, তেল নি:সরণ, শব্দদূষণ, আলো, বর্জ্য নি:সরণ, ড্রেজিং ইত্যাদির মাধ্যমেও বিপর্যয় সৃষ্টি হবে।বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আমদানি করা কয়লা সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে একমাথা থেকে আরেকমাথা পর্যন্ত পরিবহণ করার কারণে কয়লার জাহাজ থেকে নির্গত কঠিন ও তরল বর্জ্য, জাহাজের শব্দ, জাহাজ সৃষ্ট ঢেউ, সার্চ লাইটের আলো, কয়লা লোড আনলোডের ফলে সৃষ্ট দূষণ ইত্যাদিতে সুন্দরবনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটবে।(৪) কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের টারবাইন, জেনারেটর, কম্প্রেসার, পাম্প, কয়লা উঠানো নামানো, পরিবহণ ইত্যাদির কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও যানবাহন থেকে ভয়াবহ শব্দদূষণ হবে। (৫) কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত দূষিত পানি ও অন্যান্য কঠিন ও তরল বর্জ্য সুন্দরবনের পশুর নদী ও সংযুক্ত খালগুলোর পানি দূষিত করে ফেলবে। যেসব নদী সুন্দরবনের প্রাণ সেগুলোর অবস্থা বুড়িগঙ্গার চাইতেও খারাপ হবে। ফলে সুন্দরবনকে বাঁচানো যাবে না।

micchil-2

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
যে ভারতীয় এনটিপিসি বাংলাদেশে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে চাচ্ছে, সেই ভারতেরই পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ‘ইআইএ গাইড লাইন, ২০১০’ এ স্পষ্ট বলা আছে- নগর, জাতীয় উদ্যান, বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্য, সংরক্ষিত বনাঞ্চল, পরিবেশগত স্পর্শকাতর এলাকা ইত্যাদির ২৫ কি.মি সীমার মধ্যে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ এড়িয়ে চলতে হবে। অর্থাৎ ভারতীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মিলে সুন্দরবনের ঘাড়ে যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে তা ভারতের আইনে অবৈধ। সেজন্য ভারতের সজাগ মানুষও ক্রমে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন।
১৪ কি.মি দূরত্বসীমা যে মোটেই নিরাপদ কোন দূরত্ব সীমা নয়, তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করলেও স্পষ্ট বোঝা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ফায়েত্তি কাউন্টিতে ১৯৭৯-৮০ সালে ১২৩০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সময়ও স্থানীয় মানুষকে আশ্বস্ত করা হয়েছিলো। পেকান বৃক্ষগুলো (একধরনের শক্ত বাদাম, কাজু বাদামের মতো) যখন একে একে মরতে শুরু করলো ততদিনে অনেক দেরী হয়ে গেছে। ১৯৮০ থেকে ২০১০ সালের হিসেবে ফায়েত্তি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নি:সৃত বিভিন্ন বিষাক্ত গ্যাস বিশেষত সালফার ডাই অক্সাইডের বিষক্রিয়ায় পেকান, এলম, ওক সহ বিভিন্ন জাতের গাছ আক্রান্ত হয়েছে, বহু পেকান বাগান ধ্বংস হয়েছে এবং এই ক্ষতিকর প্রভাব কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে এমনকি ৪৮ কিমি দূরেও পৌঁছে গেছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আপনার বিভিন্ন কর্মকর্তা বলছেন, রামপালে ‘সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি’ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে, ফলে সুন্দরবনের কোন ক্ষতি হবে না।
আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি,তাপীয় কর্মদক্ষতা বা ইফিসিয়েন্সি অনুসারে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র তিন প্রকার: সাব ক্রিটিক্যাল, সুপার ক্রিটিক্যাল এবং আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল। সাব ক্রিটিক্যাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ন্যায় সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকেও কার্বন ডাইঅক্সাইড, সালফার ও নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড, পারদ, সীসা, আর্সেনিক মিশ্রিত বিষাক্ত ছাই ইত্যাদি নির্গত হয়। সাব ক্রিটিক্যাল টেকনোলজির তুলনায় সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোজি ব্যবহার করলে দুষণের পরিমাণ সর্বমোট মাত্র ৮ থেকে ১০ শতাংশ হ্রাস পায় যা কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভয়াবহ দূষণ সামান্যই কমাতে পারে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যেই টেকনোলজিই ব্যবহার করা হোক- বিদ্যুৎ কেন্দ্র চললে শব্দ দূষণ হবেই, বিদ্যুৎ কেন্দ্র শীতল রাখার জন্য পশুর নদী থেকে পানি গ্রহণ-বর্জন করতে হবে, ফলে ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর চাইতেও সুন্দরবনের পশুর নদী আরও ভয়াবহ দূষণ ঘটবে, শব্দ দূষণ, পানি দূষণ, আলো দূষণ ইত্যাদি ঘটবেই।
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিবেশ সমীক্ষায় শুধু রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু থাকলে পরিবেশের উপর কী প্রভাব পড়বে তার হিসেব করা হয়েছে, এর সাথে ওরিয়ন গ্রুপের বিদ্যুৎ কেন্দ্র যুক্ত হলে কী প্রভাব পড়বে তার কোন হিসেব করা হয়নি। আর ওরিয়ন গ্রুপ তো পরিবেশ সমীক্ষা ছাড়াই ২০০ একর জমি কিনে মাটি ভরাট করে ফেলেছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
কোম্পানি ও মন্ত্রণালয়ের লোকজন প্রায়ই দাবি করেন যে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ২৭৫ মিটার উঁচু চিমনী ব্যবহার করা হবে, তাতে কোন দূষণ ঘটবে না। আর বছরে মাত্র ৩ মাস বাতাস উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিকে অর্থাৎ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সুন্দরবনের দিকে প্রবাহিত হলে সুন্দরবনের কোন ক্ষতি হবে না।
প্রথমত, চিমনীর উচ্চতা বাড়ালে দূষণকারী উপাদানের পরিমাণ কমে যায় না, বা দূষণ মহাশূণ্যে চলে যায় না। বাতাসের প্রবাহ শক্তিশালী থাকলে বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কিছুটা দূরে প্রবাহিত হয় এবং প্রবাহ দুর্বল থাকলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছের বাতাসই দূষিত করতে থাকে। দ্বিতীয়ত, সরকারি পরিবেশ সমীক্ষা অনুযায়ীই, তিন মাস নয়, নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এই চার মাস ধরে বাতাস উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্বে সুন্দরবনের দিকে প্রবাহিত হবে। সুন্দরবনের বিপর্যয়ের জন্য এই চারমাসই যথেষ্ট। তাছাড়া ঘূর্ণি বাতাস ঝড় ইত্যাদি নানা কারণেই এই চারমাস ছাড়াও বছরের অন্য সময়েও বাতাস সুন্দরবনের দিকে প্রবাহিত হতে পারে।তৃতীয়ত, বাকি ৮ মাস ধরে বিষাক্ত বাতাস দক্ষিণ থেকে উত্তরে অর্থাৎ কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে খুলনা-বাগেরহাট শহরের দিকে প্রবাহিত হবে যা খুলনা-বাগেরহাটের জনবসতির জন্য বিপর্যয়কর হবে। কারণ খুলনা-বাগেরহাট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিপদসীমার মধ্যে পড়েছে।চতুর্থত, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দূষণ শুধু বায়ুবাহিত নয়, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পানিদূষণ, শব্দদূষণ, ছাইয়ের দূষণ, কয়লা পরিবহণের কারণে দূষণ সারা বছর ধরেই ঘটবে যেগুলোর সঙ্গে বাতাসের দিকের কোনো সম্পর্ক নেই।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আপনি অনেকবারই বলেছেন, বড়পুকুরিয়ার কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে তো কোন পরিবেশ দূষণ হচ্ছে না, তাহলে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পরিবেশ দূষণ হবে কেন? আপনি কিছুদিন আগে এরকমও বলেছেন যে, কয়লা দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করা হয়, সুতরাং এখানে কীভাবে ক্ষতি হবে?
আপনার চারধারে অনেক ডিগ্রীধারী লোক থাকলেও তাঁরা আপনাকে যে ভুল তথ্য এবং ধারণা দিয়ে দেশি বিদেশি কিছু গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করছে তা এতেই পরিষ্কার হয়। বাস্তবে যে কেউ বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশপাশে গেলেই দেখতে পাবেন পরিবেশ বিপর্যয়ের ভয়াবহ উদাহরণ। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চারপাশের কৃষিজমি কয়লা দূষণে রীতিমত কালো রঙ ধারণ করেছে, মাটির নিচের পানির স্তর নেমে গেছে, ছাইয়ের পুকুরে গাদা করে রাখা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই পরিবেশ দূষণ ঘটাচ্ছে, ফসল ও মাছ বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।দ্বিতীয়ত, বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে প্রস্তাবিত রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তুলনা সঠিক নয়। কারণ বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছোট আকারের এবং বড়পুকুরিয়ার পাশে সুন্দরবনের মতো স্পর্শকাতর বিশ্বঐতিহ্য বনাঞ্চল নেই। বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা মাত্র ২৫০ মেগাওয়াট যার মধ্যে আবার কার্যত ১২৫ মেগাওয়াটের একটি ইউনিটই কেবল চালু থাকে। অথচ রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট যা বড়পুকুরিয়ার কার্যকর (১২৫ মেগাওয়াট) বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ১০ গুণেরও বেশি। ফলে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ফলে যে ক্ষতি হয়েছে এবং হচ্ছে, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ফলে তার দশগুণেরও বেশি ক্ষতি হবে।তৃতীয়ত, আপনার উপদেষ্টারা আপনাকে কাঠ কয়লা ও খনিজ কয়লার পার্থক্য বুঝতে সাহায্য করেনি। তাদের হাতেই জিম্মি হয়ে যাচ্ছে সুন্দরবন, এটা আমাদের উদ্বেগের একটি বড় কারণ।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
সরকার থেকে বলা হচ্ছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত ছাই বাতাসে ছড়াবে না এবং এই ছাই সিমেন্ট কারখানা, রাস্তাঘাট নির্মাণ ইত্যাদি কাজে সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করা হবে।
‘কিছু উড়ন্ত ছাই’ বাতাসে মিশবে বলে স্বীকার করা হয়েছে খোদ ইআইএ রিপোর্টেই। আবার যে বিষাক্ত ছাই পরিবেশে মিশবে না বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে সেই ছাই দিয়েই কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য অধিগ্রহণ করা ১৮৩৪ একর জমির মধ্যে ১৪১৪ একর জমি ভরাট করা হবে বলে পরিকল্পনা করা হয়েছে। এভাবে ছাই দিয়ে জমি ভরাট করা হলে ছাইয়ের মধ্যে থাকা আর্সেনিক, পারদ, সীসা ইত্যাদি বিষাক্ত ভারী ধাতু বৃষ্টির পানির সাথে মিশে, চুইয়ে মাটির নীচের এবং মাটির উপরের পানি দূষিত করবে যা সুন্দরবনকে বিপর্যস্ত করবে।
আর ছাইয়ের সুষ্ঠু ব্যবহার সম্পর্কে যা বলা হচ্ছে তা মিথ্যা আশ্বাস ছাড়া আর কিছু না। কারণ বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে দৈনিক মাত্র ৩০০ মেট্রিক টন বর্জ্য ছাই উৎপাদিত হয়। এগুলো ছাই-এর পুকুর বা অ্যাশ পন্ডে গাদা করে রেখে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটানো হচ্ছে। ২০০৬ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত চার বছরে ২ লক্ষ ৬০ হাজার ৬১৩ টন ছাই পুকুরে জমা করে পুকুরের প্রায় পুরোটাই ভরে ফেলা হয়েছে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্যও পশুর নদীর একেবারে পাশে ১০০ একরের ছাইয়ের পুকুরের পরিকল্পনা করা হযেছে। অ্যাশ পন্ড বা ছাইয়ের পুকুরে গাদা করে ছাই বাতাসে উড়ে, ছাই-মিশ্রিত পানি চুইয়ে মাটির নিচে ও আশপাশের নদী ও জলাভূমিতে বিষাক্ত ভারি ধাতুর মারাত্মক দূষণ ঘটাবে।
ভারতে এনটিপিসির বৃহৎ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই কীভাবে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পানি ও খাদ্য উৎপাদনকে বিপর্যস্ত করছে তা সরেজমিনে দেখে এসেছেন জাতীয় কমিটির এক প্রতিনিধিদল। বাংলাদেশ পানিপ্রধান ও উর্বর জমির দেশ বলে, আর আলোচ্য কেন্দ্রের পাশে সুন্দরবন আছে বলে এই ক্ষতির মাত্রা আরও বহুগুণ বেশি হবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, সুন্দরবনের ভেতরে পশুর নদী দিয়ে তো এমনিতেই অনেক জাহাজ চলাচল করছে। তাহলে কয়লা ভর্তি জাহাজ চলাচল করলে কী সমস্যা? তাছাড়া কয়লার জাহাজে পুরোপুরি ঢেকেই কয়লা পরিবহণ করা হবে, তাহলে পরিবেশ দূষণ হবে কীভাবে?
সুন্দরবনের মধ্যে দিয়ে বর্তমানে যে জাহাজ চলাচল করছে সেগুলো অপেক্ষাকৃত ছোট জাহাজ, কয়েকশো টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন। সেগুলোর প্রভাবে ইতোমধ্যেই সুন্দরবনের ক্ষতি হতে শুরু করেছে। এরমধ্যে কয়লা ও তেলবাহী এরকম জাহাজের একাধিক দুর্ঘটনায় অপরিমেয় দীর্ঘকালীন ক্ষতি হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন। এমনকি আপনিও এ পথে জাহাজ চলাচল বন্ধ করার কথা বলেছেন। অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে: “সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে চালু হওয়া নৌপথের কারণে পূর্ব সুন্দরবন প্রাণিশূন্য হতে শুরু করেছে। প্রতিদিন প্রায় ১৫০টি বিশাল আকৃতির নৌযান বনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। এসব নৌযানের ঢেউ, ফেলে যাওয়া বর্জ্য তেল ও শব্দদূষণের কারণে বনের দুই পাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃক্ষ, লতা, গুল্ম মরতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে বনের জীববৈচিত্র বিপন্ন হয়ে পড়েছে।”
সাধারণ নৌযান চলাচলের ফলেই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে দুষণকারী কয়লাভর্তি বড় বড় জাহাজ চলাচল করলে কিংবা সেই কয়লাভর্তি জাহাজ যদি কখনো ডুবে যায় সুন্দরবনের কী অবস্থা হবে তা চিন্তাও ভীতিকর।আর কয়লা যতই ঢেকে পরিবহণ করা হোক কিংবা জাহাজের গতি যতই নিয়ন্ত্রণ করা হোক, তাতে জাহাজের কয়লাস্তুপ থেকে চুইয়ে পড়া কয়লা-ধোয়া বিষাক্ত পানি (বিলজ ওয়াটার), অ্যাংকরেজ পয়েন্টে কয়লা লোড-আনলোড করার সময় সৃষ্ট দূষণ, কয়লার গুড়া, জাহাজ-নিঃসৃত তেল-আবর্জনা, জাহাজ চলাচলের শব্দ, ঢেউ, বনের ভেতরে জাহাজের সার্চলাইটের তীব্র আলো, জাহাজের ইঞ্জিন থেকে নির্গত বিষাক্ত সালফার ও নাইট্রোজেন গ্যাস ইত্যাদির ক্ষতিকর প্রভাব দূর হয়ে যায় না।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আপনি বলেছেন, কোম্পানির লোকজনও বলেছেন, অক্সফোর্ডসহ বিশে^র বিভিন্ন শহরে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে , সেগুলোতে কোনো ক্ষতি হয়না। এটাতে কেনো হবে?
প্রকৃত তথ্য হলো, অক্সফোর্ডে Didcot নামের একটি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হয় ১৯৭০ সালে যখন কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দূষণ নিয়ে সচেতনতা আজকের পর্যায়ে ছিল না। কিন্তু কয়লা বিদ্যুতের দূষণ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও আন্দোলনের কারণে অক্সফোর্ডের এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র ২০১৩ সালের মার্চ মাসে বন্ধ করে দেয়া হয়।অক্সফোর্ড ছাড়া যেসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কথা বলা হয় সেগুলোসম্পর্কেযে কেউ খোঁজ খবর করে দেখতে পারেন, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো মানুষ ও প্রকৃতির উপর কী ধরণের প্রভাব ফেলছে।গত শতকের নব্বই দশকে নির্মিত থাইল্যান্ডের Mae Moh কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে হাজার হাজার মানুষ ফুসফুসের অসুখে ভুগেছে, চারপাশের কৃষি অঞ্চলে ফসলের ফলন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, জলাভূমিতে আর্সেনিক, ক্রোমিয়াম ও ম্যাংগানিজ এর দূষণ ঘটেছে।ভিয়েতনামের Quang Ninh কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বন্যা ও জলোচ্ছাসের সময় বিপুল পরিমাণ কয়লা দিয়েন ভং নদীতে ভেসে গেছে, ব্যাপক নদী দূষণ ঘটেছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ আরো কিছু কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য হা লং বে’ও মারাত্মক দূষণের শিকার হয়েছে। ছবিতে যেমনই দেখা যাক, তাইওয়ানের Taichung কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে দুনিয়ার অন্যতম দূষণকারী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বলা হয়। এই কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে তাইওয়ানের মধ্য ও দক্ষিণ অঞ্চলে বায়ু দূষণ এত বেড়েছে যে এক পর্যায়ে আন্দোলনের মুখে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উৎপাদন কমিয়ে ফেলতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে আর চারপাশের পানি ও বাতাস দূষিত হবে না, মানুষ ও প্রকৃতির দূষণ ঘটবে না- কারিগরী ভাবে এটা এখনও অসম্ভব। আশা করি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চকচকে ছবি দেখে আপনি বিভ্রান্ত হবেন না।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আপনি নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন যে,বাংলাদেশের জন্য সুন্দরবন এক অমূল্য সম্পদ। আমরা সুঁই থেকে রকেট সবই তৈরি করতে পারবো কিন্তু এরকম অসাধারণ জীববৈচিত্র ভরা বিশ্ব ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃত সুন্দরবন আরেকটি তৈরি করতে পারবো না। এই সুন্দরবন আমাদের বিপুল সম্পদ যোগান দেয়। এই সুন্দরবন  লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান করে, জীববৈচিত্রের অসাধারণ আধার হিসেবে আমাদের সকলের প্রাণ সমৃদ্ধ করে। এই বন প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাকৃতিক বর্ম হিসেবে উপক’লীয় অঞ্চলের কয়েক কোটি মানুষের প্রধান অবলম্বন। এই বন জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের টিকে থাকার প্রধান শক্তি। সেজন্যই আমরা বার বার বলি, বিদ্যুৎ উৎপাদনের বহু বিকল্প আছে কিন্তু সুন্দরবনের কোন বিকল্প নাই। আজ প্রয়োজন শুধু এর রক্ষা নয়, এর বিকাশে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আমাদের অনুসন্ধান অনুযায়ী সারাদেশের সকল পর্যায়ের মানুষ তাই এই সুন্দরবনবিনাশী প্রকল্পের বিরুদ্ধে। আপনার যদি কোনো সংশয় থাকে আপনি গণভোট দিন। সবাই যদি যথাযথভাবে মতপ্রকাশ করতে, ভোটের অধিকার প্রয়োগ করবার সুযোগ পান তবে আমরা নিশ্চিত দেশের শতকরা ৯৯ ভাগ মানুষ এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন।
মন্ত্রণালয় থেকে প্রচারিত বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আপনি চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ পুরষ্কার পেয়েছেন সেজন্য আপনার হাত দিয়ে পরিবেশ বিধ্বংসী কাজ হতে পারে না। আমরাও তাই বলি। সেজন্যই আমরা দাবি জানাই আপনি অবিলম্বে সুন্দরবনবিনাশী এই প্রকল্প বাতিল করুন। আমরা চাই না ইতিহাসে পরিবেশধ্বংসী হিসেবে আপনার পরিচয় থাকুক, সেই পরিচয়ে বিশ^বাসী আপনাকে অভিহিত করুক। আপনি প্রশ্ন করতে পারেন তাহলে বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানের উপায় কী? আপনার অবগতির জন্যই আমাদের বিকল্প প্রস্তাব ৭ দফা আপনার সামনে পেশ করছি। প্রয়োজনে এর বিস্তারিত আমরা আপনার কাছে উপস্থিত করতে পারি। কোম্পানি বা দেশি বিদেশি মুনাফালোভী গোষ্ঠীর সুবিধাভোগী লোকজন নয়, আপনি যদি দেশি বিদেশি স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের মতামত বিবেচনা করেন, যদি দেশ ও জনগণের স্বার্থ আপনার চিন্তায় অগ্রাধিকার পায়, যদি জনমতকে আপনি গুরুত্ব দেন তাহলে আপনি নিশ্চয়ই আমাদের সাথে একমত হবেন যে, সুন্দরবন বিনাশী রামপাল, বৃহৎ ঋণ ও ভয়াবহ ঝুঁকি নির্ভর রূপপুর, মানুষ খুনের ওপর বাঁশখালী নয় জাতীয় কমিটির ৭ দফাই বিদ্যুৎ সমস্যার টেকসই সমাধান দিতে পারবে। এগুলোর মাধ্যমে অনেক কম খরচে বিনা ঝুঁকিতে কমদামে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং গতিশীল টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা যাবে।

জাতীয় কমিটির ৭ দফা ২০১৬
এক. গ্যাস, তেল ও কয়লাসহ সকল প্রাকৃতিক সম্পদে জনগণের শতভাগ মালিকানা নিশ্চিত করতে হবে। শতভাগ খনিজ সম্পদ দেশের স্বার্থে সংরক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সদ্ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা ও সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। জাতীয় স্বার্থ, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে জ্বালানী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পরিবেশ ও জনস্বার্থ নিশ্চিত করার মাধ্যমে নবায়নযোগ্য ও অনবায়নযোগ্য জ্বালানী সম্পদের সর্বোত্তম মিশ্রণ ঘটিয়ে একটি জ্বালানী নীতি প্রণয়ন করে তার বাস্তবায়নে প্রয়োজনীর প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নির্মাণ করতে হবে। জাতীয় সক্ষমতা বিকাশের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আরও বিভাগ এবং জাতীয় ভাবে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে হবে। এ কাজে প্রবাসী বাংলাদেশী বিশেষজ্ঞদের কাজে লাগাতে হবে।
দুই. অবিলম্বে দুর্নীতি ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতার ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত ‘দায়মুক্তি আইন’ বাতিল করতে হবে। ‘খনিজ সম্পদ রফতানি নিষিদ্ধ’ করবার আইন পাশ করতে হবে। দায়মুক্তি আইন ব্যবহার করে সম্পাদিত সকল চুক্তি বাতিল করে টেকসই বিদ্যুৎ উৎপাদনের পথনকশা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। বিদ্যুৎ খাতকে দেশি বিদেশি ব্যবসার হাতে জিম্মি করবার বিদ্যমান নীতি, চুক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা থেকে দেশকে সম্পূর্ণ মুক্ত করতে হবে।
তিন. রামপাল ও ওরিয়ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সুন্দরবনবিনাশী সকল প্রকল্প বাতিল করতে হবে। সুন্দরবনের ক্ষয়রোধ ও তার পুনরুৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ‘সুন্দরবন নীতিমালা’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। বিশ^ব্যাংক ও ইউএসএইডের বনধ্বংসী প্রকল্প থেকে সুন্দরবনকে মুক্ত করতে হবে।
চার. বিশাল ঋণ ও ভয়াবহ ঝুঁকিনির্ভর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র-র পরিবর্তে সেইস্থানে অনেক কম ব্যয়সাপেক্ষ ঝুঁকিমুক্ত বৃহৎ গ্যাস, বর্জ্য ও সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। বাঁশখালী হত্যাকান্ডের বিচার করতে হবে। এসআলম ও চীনাগ্রুপের জালিয়াতি, ভুমিগ্রাস এবং জোরজুলুম বন্ধ করে জনসম্মতির ভিত্তিতে সেই জমিতে গ্যাস, বর্জ্য, সৌর বিদ্যুৎ ও বায়ু বিদ্যুতের বৃহৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।
পাঁচ. বেআইনীভাবে বাংলাদেশের কয়লা দেখিয়ে বিদেশে শেয়ার ব্যবসার অর্থ জরিমানা হিসেবে আদায় করে, এশিয়া এনার্জিকে (জিসিএম) দেশ থেকে বহিষ্কার ও উন্মুক্ত খনন পদ্ধতি নিষিদ্ধ সহ ফুলবাড়ী চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। বাংলাদেশের আবাদী জমি, পানিসম্পদ, জনবসতি ও পরিবেশ প্রাধান্য দিয়ে খনিজ সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নিতে হবে।
ছয়. শতভাগ গ্যাসসম্পদ দেশের কাজে লাগানোর জন্য দুর্নীতিনির্ভর ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী পিএসসি প্রক্রিয়া বাতিল করতে হবে। পরিবর্তে স্থলভাগে ও সমুদ্রে নতুন নতুন তেল গ্যাস ক্ষেত্র অনুসন্ধানে জাতীয় সংস্থাকে প্রয়োজনীয় সুযোগ, ক্ষমতা ও বরাদ্দ দিতে হবে। প্রয়োজনে সাবকন্ট্রাক্ট ও বিদেশী বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিয়ে সমতল, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সমুদ্রসীমার সম্পদ অনুসন্ধান ও উত্তোলন শতভাগ জাতীয় মালিকানায় করতে হবে। এগুলোর ওপর ভিত্তি করে  বৃহৎ গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ প¬ান্ট স্থাপন করবার কাজ শুরু করতে হবে। মাগুড়ছড়া ও টেংরাটিলায় দুটো গ্যাসক্ষেত্র ধ্বংসের জন্য দায়ী শেভ্রন ও নাইকোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে কমপক্ষে ৫০ হাজার কোটি টাকা আদায় করে তা টেকসই জ¦ালানী নিরাপত্তার কাজে ব্যয় করতে হবে।
সাত. জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও বন্দর নিয়ে বিভিন্ন সরকারের আমলে যে সব জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি করা হয়েছে, সেগুলো প্রকাশ করতে হবে এবং দায়ী দুর্নীতিবাজ জাতীয় স্বার্থবিরোধী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

তেল গ্যাস খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির পক্ষে
প্রকৌশলী শেখ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ  ও অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ
ঢাকা। ২৮ জুলাই ২০১৬