Thursday, November 28th, 2013
সংশোধিত পিএসসি ২০১২ অনুযায়ী জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে বেঈমানী করে কনোকো-ফিলিপসের সাথে সর্বনাশা চুক্তি করবেন না
তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এবং সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানা গেছে যে, বর্তমান নির্বাচনকালীন সরকার আগামি ২রা ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে সংশোধিত ‘পিএসসি ২০১২’ অনুযায়ি কনোকো-ফিলিপসের সাথে একটি গ্যাস ব্লক চুক্তি করতে যাচ্ছে। একই ধারায় সরকার আরও দুইটি ব্লকে শীগগিরই চুক্তি করবে বলেও জানা গেছে। এই ধরনের চুক্তি স্বাক্ষর করা নির্বাচনকালীন সরকারের এখতিয়ার বহির্ভূত। উপরন্তু এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে বিদেশি কোম্পানিকে এত বেশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে যে, নিজ দেশের গ্যাস সম্পদ ব্যবহারের সামান্য সুযোগও বাংলাদেশের জনগণ পাবে না।
সংশোধিত পিএসসি ২০১২-তে বিদেশি কোম্পানির মুনাফা অতিমাত্রায় বৃদ্ধির স্বার্থে গ্যাসের ক্রয়মূল্য আগের চুক্তির তুলনায় শতকরা ৬০-৭০ ভাগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, প্রতিবছর গ্যাসের দাম শতকরা ৫ ভাগ হারে বৃদ্ধির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তৃতীয়ত, ব্যয় পরিশোধ পর্বে বিদেশি কোম্পানির অংশীদারিত্ব শতকরা ৫৫ ভাগ থেকে বৃদ্ধি করে শতকরা ৭০ ভাগ করা হয়েছে। চতুর্থত, যথেচ্ছ মূল্যে তৃতীয় পক্ষের কাছে গ্যাস বিক্রয়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এইরকম মডেলে চুক্তি সম্পাদন করলে বঙ্গোপসাগরের গ্যাস সম্পদ যে শুধু বিদেশি কোম্পানির দখলে চলে যাবে তাই নয়, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্পায়নের জন্য গ্যাস সম্পদকে কাজে লাগানোও সম্ভব হবে না। আমদানি করা গ্যাসের চাইতেও বেশি খরচ হবে নিজ দেশের গ্যাস ক্রয়ে। উপরন্তু চুক্তির কারনে বাংলাদেশের আর্থিক বোঝাও সীমাহীন বাড়বে। আমরা নির্বাচনকালীন সরকারকে নিজেদের স্বাভাবিক কর্মপরিধির বাইরে গিয়ে এই জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি স্বাক্ষর থেকে বিরত থাকার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। এই ধরনের পিএসসি প্রক্রিয়া বঙ্গোপসাগরের বিশাল সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেবার ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ। জনগণকে বঞ্চিত করে, ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে দেশের সম্পদ উজাড় করে দেওয়ার এইসব চক্রান্তের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।