?> দিল্লিতে আনু মুহাম্মদ: সুন্দরবন প্রকল্প থেকে সরে আসতে ভারত সরকারকে আহবান « NCBD – National Committee of Bangladesh

Thursday, October 31st, 2013

দিল্লিতে আনু মুহাম্মদ: সুন্দরবন প্রকল্প থেকে সরে আসতে ভারত সরকারকে আহবান

ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের কয়লা খনি এবং কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে রাজধানী দিল্লিতে এক মত-বিনিময় সভায় তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ-বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ, ভারত- বাংলাদেশ যৌথ ব্যবস্থাপনায় রামপাল কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সরে আসার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহবান জানান।

তিনি বলেন, সুন্দরবন ধ্বংসে দুই দেশের সরকারের নেয়া প্রকল্পের বিরুদ্ধে দুই দেশের সাধারণ জনগণকে রুখে দাঁড়াতে হবে।

দিল্লী ফোরামের আয়োজনে ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সাথে ভারতীয় বিভিন্ন আ্যক্টিভিস্ট গ্রুপের অভিজ্ঞতা বিনিময় সভায় তিনি এ আহবান জানান।

আনু মুহাম্মদ বলেন, ভিডিও কনফারেন্স আর রিমোট কনট্রোলের মাধ্যমে সুন্দরবন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন ঘোষণা করা যেতে পারে, কিন্তু রিমোট কনট্রোল দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা যাবে না।

দিল্লি ফোরামের আহবায়ক সঞ্জীব কুমারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের কয়লা খনি’র ফলে ভূক্তভোগি এবং আ্যাক্টিভিস্টদের অংশ গ্রহণে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল সুন্দরবন এবং দিনাজপুরের ফুলবাড়ি আন্দোলনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।

দিনাজপুরের ফুলবাড়িতে কয়লা খনির বিরুদ্ধে আন্দোলন করা ৭ জন প্রতিনিধি আনু মুহাম্মদের নেতৃত্বে গত ২৪ অক্টোবর থেকে ভারতের ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ, ঝারিয়া, রামগড়, হাজারিবাগ এলাকার কয়লা খনি এবং ভারতের কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রাজধানী হিসাবে খ্যাত মধ্য প্রদেশের সিঙরুলি এলাকার কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এই জেলাতে ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সরকবারি সংস্থা এনটিপিসি সবচে বেশি পরিমান বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।

আনু মুহাম্মদ বলেন, এই পরিদর্শনে আমরা ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যকার অনেক পার্থক্য দেখতে পেয়েছি। এখানকার কয়লা খনিগুলা সবই পাহাড়ি এলাকায়, কৃষি অনুপযুক্ত জমিতে এবং এর মালিক ভারতের সরকার বা ব্যক্তিগত মালিকানাধীন আর উৎপাদিত কয়লা দিয়ে যে সব বিদ্যুৎ কেন্দ্র হয়েছে, সেই বিদ্যুৎ ভারতেই ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্র্রে ভৌগলিক পরিস্থিতি তো ভিন্নই, উপরন্ত বিদেশী কোম্পানির তত্ত্বাবধানে উত্তোলিত কয়লা রপ্তানির কথা বলা হয়েছে সরকারের চুক্তিতে।

তিনি বলেন, খুলনায় সুন্দর বন এলাকা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে রামপাল এলাকায় ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ পাওয়ার প্ল্যান্টের উদ্বোধন হয়েছে, সেখানে এর বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিরোধ দিন দিন প্রবল হচ্ছে ।

আনু মুহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশ অংশে সুন্দরবন ধ্বংস হলে তার প্রভাব ভারতের সীমান্ত রেখা ঠেকাতে পারবে না। সেই ক্ষতি ভারতের সুন্দরবনকেও গ্রাস করবে। তাই আপনারা সোচ্চার হন সুন্দরবন বাঁচাতে এবং প্রতিরোধের নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করেন।যদি ভারতের জনগণ তাদের সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন, তাহলে বাংলাদেশের জনগণের ভারত সম্পর্কে শত্রুতা নয়, বন্ধুত্বময় ধারণা তৈরি হবে।

অনুষ্ঠানে ভারত বিজ্ঞান যাতা, রোজা লুক্সেমবার্গ ফাউন্ডেশনসহ বেশ কিছু সংগঠনের প্রতিনিধি এবং ঝাড়খণ্ড, সিঙরুলির ভূক্তভোগিরা বক্তব্য রাখেন।