?> ‘ব্যয়বহুল রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প  দেশকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে’ « NCBD – National Committee of Bangladesh

Saturday, December 23rd, 2017

‘ব্যয়বহুল রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প  দেশকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে’

তেলগ্যাসখনিজ সম্পদ বিদ্যুৎবন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আয়োজিতরূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প : সমাধান না বিপদ’-শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেছেন, জনগণকে অন্ধকারে রেখে পারমাণবিক যুগে প্রবেশের কথা বলে যে প্রকল্পের উদ্বোধন করা হলো এইব্যয়বহুল রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প দেশকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে প্রকল্পের স্থান নির্বাচন থেকে শুরু করে প্রকল্প পরিচালনা, পানির ব্যবহার, পারমাণবিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পারমাণবিক দুর্ঘটনা এমনকি অর্থনৈতিক বিবেচনা থেকেও এই প্রকল্প দেশের স্বার্থ রক্ষা করবে না বক্তারা বিদ্যুৎ উৎপাদনে জাতীয় কমিটি প্রস্তাবিত বিকল্প পথ বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান 

আজ ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭, শনিবার, সকাল ১১টায় রাজধানীর মুক্তিভবনের প্রগতি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় কমিটি সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময়ে বক্তারা এসব কথা বলেন মতবিনিময়েরূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প : আমাদের উদ্বেকসমূহলিখিত বক্তব্য উত্থাপন করেন আবুল হাসান রুবেল রূপপুর প্রকল্পের বিভিন্ন দিকের মূল্যায়ন তুলে ধরেন প্রকৌশলী মওদুদুর রহমান বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’ সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল মতিন, অর্থনীতিবিদ সুজিত চৌধুরী, রাজনীতিক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সৈয়দ আবুল কালাম, ডা. ফজলুর রহমান, অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা, মিজানুর রহমান, ইমরান হাবিব রুম্মন, বিথী ঘোষ প্রমুখ এসময় সাজ্জাদ জহির চন্দন, জাহিদুল হক মিলু, মোশারফ হোসেন নান্নু, শহিদুল ইসলাম সবুজ, আকবর খান, ফখরুদ্দিন কবির আতিক, প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা, মাসুদ খান, শামসুজ্জামান, মীর রেজাউল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন


press-conf-on-ruppur-23Dec2017-2

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, সারাবিশ্ব যখন নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে এগোচ্ছে, তখন বাংলাদেশে লক্ষ ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রূপপুর প্রকল্প কোনোভাবেই জনস্বার্থে হচ্ছে না তিনি বলেন, সরকার প্রকৃতপক্ষে স্বচ্ছতার সাথে এবং এই প্রকল্পে কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে না এটা বিশ্বাস করলে কোনো ক্রমেই দায়মুক্তি আইনের অধীনে এই প্রকল্প করতে পারে না তিনি সরকারকে দেশের স্বার্থে রামপালরূপপুর প্রকল্প থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে জাতীয় কমিটি প্রস্তাবিত পথে এগুলে কম খরচে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনও করা যাবে আবার দেশের স্বার্থ সংরক্ষণও হবে

ডা. আব্দুল মতিন বলেন, রূপপুর প্রকল্পের পারমাণবিক বর্জ্য রাশিয়া নিয়ে যাবে বলে যে কথা বলা হচ্ছে সেটা সঠিক নয় সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দুর্ঘটনা ঘটবে না বলেও যেটা বলা হচ্ছে তা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞরা গ্রহণ করেন না বাংলাদেশের মত জনবহুল একটা দেশে দুর্ঘটনা ঘটলে তখন দায় নেয়ার কেউ থাকবে না তিনি বলেন, রাশিয়া তার অর্থনৈতিক বিবেচনা থেকে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে ধরনের পারমাণবিক প্রকল্প করার ব্যাপারে ঋণ দিচ্ছে এতে তারা তাদের স্বার্থ দেখছে, অথচ আমরা আমাদের স্বার্থ দেখছি না

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, বলা হচ্ছে বাংলাদেশ পারমাণবিক যুগে প্রবেশ করল বাস্তবে প্রশ্ন হলো আমরা কি পারমাণবিক যুগে, নাকি পারমাণবিক ঝুঁকির যুগে প্রবেশ করলাম?

সুজিত চৌধুরী বলেন, জার্মানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ অনেক আগেই পারমাণবিক প্রকল্প থেকে সবুজ জ্বালানির দিকে গেছে অথচ আমরা পরিত্যাক্ত পথ গ্রহণ করে দেশের স্বার্থ বিপন্ন করছি

মতবিনিময়ে বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সঙ্কটকে জিম্মি করে সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের পথকে উপেক্ষা করে যেভাবে বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করছে, তা দেশের জন্যে ভবিষ্যতে বোঝা হয়েই দাঁড়াবে এর বিরুদ্ধে সচেতন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নাই