?> শেভরন ও নাইকোর সাথে দুর্নীতিযুক্ত সমঝোতা বাতিল করে বাংলাদেশের পাওনা ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে « NCBD – National Committee of Bangladesh

Tuesday, June 13th, 2017

শেভরন ও নাইকোর সাথে দুর্নীতিযুক্ত সমঝোতা বাতিল করে বাংলাদেশের পাওনা ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে

১৪ জুন ‘মাগুড়ছড়া দিবস’ উপলক্ষে জাতীয় কমিটির দাবি
শেভরন ও নাইকোর সাথে দুর্নীতিযুক্ত সমঝোতা বাতিল করে বাংলাদেশের পাওনা ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে

তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এবং সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ‘মাগুড়ছড়া দিবস’ উপলক্ষে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেছেন, “দুই দশক পার হলেও এই সময়কালের বিভিন্ন সরকারের দুর্নীতি ও ভুলনীতির কারণে বাংলাদেশ এখনও বহুজাতিক কোম্পানির কাছ থেকে তার পাওনা বিপুল সম্পদ থেকে বঞ্চিত আছে। গত ১৯৯৭ সালের ১৪ জুন মার্কিন অক্সিডেন্টাল কোম্পানির দায়িত্বহীনতায় সিলেটের ১৪ নম্বর ব্লকে মাগুড়ছড়ায় ভয়ংকর বিস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণে তদন্ত কমিটির রক্ষণশীল হিসাবেও গ্যাসসম্পদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২৪৫ বিসিএফ বা বিলিয়ন ঘনফুট। এছাড়া পরিবেশ এর যে ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে তা দীর্ঘমেয়াদের এবং পুরোটা পরিমাপযোগ্য নয়। অথচ ক্ষতিপূরণ না দিয়ে অক্সিডেন্টাল ১৯৯৯ সালে ইউনোক্যাল নামে আরেকটি মার্কিন কোম্পানির সাথে তাদের ব্যবসা কার্যক্রম বিনিময় করে চলে যায়। এরপর মাগুড়ছড়ার ক্ষতিপূরণের বিষয়ে কোন ফয়সালা না করেই ইউনোক্যাল-এর ব্যবসা গ্রহণ করে আরেকটি মার্কিন কোম্পানি শেভরন। সম্প্রতি মার্কিন কোম্পানি শেভরন নিজেদের ইচ্ছা ও সুবিধামতো চীনা এক অপরিচিত অদক্ষ কোম্পানির কাছে বাংলাদেশের সবচাইতে সমৃদ্ধ গ্যাসব্লক বিক্রি করেছে। বাংলাদেশের সম্পদ নিয়ে এসব ছিনিমিনি খেলায় সরকার প্রতিবারই ‘কিছুই জানি না’ বলে দায়িত্ব এড়াতে চেয়েছে, কিন্তু এগুলো যে দুর্নীতিযুক্ত বোঝাপড়ার মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়েছে তা সহজেই বোধগম্য।”

বিবৃতিতে নেতবৃন্দ আরও বলেন, “টেংরাটিলা নামে পরিচিত ছাতক গ্যাসফিল্ডে ২০০৫ সালে ৭ জানুয়ারি ও ২৪ জুন পরপর দুটো বিস্ফোরণ ঘটে। কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর অদক্ষতা ও দায়িত্বহীনতার জন্যই এই ভয়ংকর ঘটনা ঘটে। এখানেও ২৬৮ বিসিএফ থেকে ৩০৫ বিসিএফ গ্যাস নষ্ট হয়েছে। গড় হিসাব বিবেচনা করলে মাগুড়ছড়া ও ছাতক টেংরাটিলার বিস্ফোরণগুলোতে বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত প্রমাণিত সর্বমোট গ্যাস মজুতের মধ্যে কমপক্ষে প্রায় ৫৫০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ধ্বংস হয়েছে। এই দুটো ক্ষেত্রে যে পরিমাণ গ্যাস নষ্ট হয়েছে তা প্রায় দুই বছরে সারাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে পরিমাণ গ্যাস ব্যবহৃত হয়েছে তার সমান। এই বিশাল ক্ষতি নিয়ে কোন সরকারকে কখনো কথা বলতে শোনা যায়নি, এই বিপুল পরিমাণ ক্ষতিপূরণ আদায় করতে কোনো সরকারই উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। উল্টো তাদেরকে নানারকম ছাড়, ভর্তুকি ও সুবিধা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। ক্ষতিপূরণ নিয়ে একটা হাস্যকর রকম কম অংকের টাকা বলে সাজানো আয়োজনও মাঝে মধ্যে দেখা হচ্ছে। দেশ যখন গ্যাসের সংকটে তখন শেভরন ও নাইকোকে অবশ্যই সেই পরিমাণ গ্যাস দেশের বাইরে থেকে এনে দিতে হবে অথবা এর পুরো খরচ প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশকে পরিশোধ করতে হবে। আমরা সরকারের কাছে আবারও নাইকো ও শেভরনের কাছ থেকে এই পরিমাণ ক্ষতিপূরণ আদায় এবং ক্ষতিপূরণ না দিয়ে শেভরনের পালানোর সবরকম আয়োজন বন্ধ করবার জোর দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে এই দাবিতে ১৪ জুন সারাদেশব্যাপী ‘মাগুড়ছড়া-টেংরাটিলা দিবস’ পালনের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”