?> সুন্দরবনবিনাশী রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ তৎপরতা বন্ধ করবার দাবিতে ২৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও দাবি সমাবেশ পালন করুন « NCBD – National Committee of Bangladesh

Wednesday, February 24th, 2016

সুন্দরবনবিনাশী রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ তৎপরতা বন্ধ করবার দাবিতে ২৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও দাবি সমাবেশ পালন করুন

তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমরা ক্ষোভ এবং বেদনার সঙ্গে জানতে পেরেছি যে, দেশবাসীর প্রতিবাদ এবং ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা উপেক্ষা করে সরকার বিপুল ঋণের বোঝা কাঁধে নিয়ে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকাজের জন্য ভারতীয় হেভি ইলেকট্রিক কোম্পানির সাথে চুক্তি করতে যাচ্ছে। একদিকে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে এই অনবায়নযোগ্য বিশাল আশ্রয় ও রক্ষাবর্ম সুন্দরবন হত্যার সরাসরি আয়োজন চলছে, অন্যদিকে দেশের প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের নানারকম প্রকল্প অনুমোদন দিয়ে সুন্দরবনকে পরোক্ষভাবে শ্বাসরোধের ব্যবস্থাও চলছে। রামপাল প্রকল্প সামনে রেখে ওরিয়নের কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শিপইয়ার্ড, সাইলো, সিমেন্ট কারখানাসহ সুন্দরবনবিনাশী নানা বাণিজ্যিক ও দখলদারী অপতৎপরতা বাড়ছে।

প্রকৃতপক্ষে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক বিকল্প আছে কিন্তু সুন্দরবনের কোন বিকল্প নেই। পৃথিবীর বৃহত্তম এই ম্যানগ্রোভ বন প্রাণ-বৈচিত্রের এক অসাধারণ সম্পদ, এক অতুলনীয় ইকোসিস্টেম, পরিবেশশোধনের প্রাকৃতিক ব্যবস্থা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের জন্য সবচাইতে শক্তিশালী প্রাকৃতিক রক্ষা বর্ম। সুন্দরবন আছে বলে প্রতিটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বাঁচে। সুন্দরবন বিনষ্ট হওয়া মানে বহুলক্ষ মানুষের জীবিকা হারানো, উপকূলীয় অঞ্চলের কয়েক কোটি মানুষকে মৃত্যু ও ধ্বংসের হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া।
বিদ্যুৎ সংকট সমাধানের কথা বলেই এসব সর্বনাশা প্রকল্প বাস্তবায়ন করার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে যথাযথ পথ গ্রহণে সবসময়ই দাবি করে আসছি, জাতীয় কমিটির ৭ দফা দাবিতে তার সমাধানের পথও দেখিয়েছি। কিন্তু সরকার এসব কম ব্যয়বহুল, নিরাপদ, টেকসই এবং জনপরিবেশ-অনুকূল পথে না গিয়ে দেশি-বিদেশি কতিপয় গোষ্ঠীর স্বার্থে তার উল্টোযাত্রা অব্যাহত রেখেছে।

এর প্রতিবাদে আগামি ২৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এইদিন বিকাল ৪টায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া সুন্দরবনবিনাশী সকল প্রকল্প বাতিল করে জাতীয় কমিটির ৭ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে আগামী ১০ মার্চ ঢাকার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভিন্নভিন্ন ভাবে সুন্দরবন অভিমুখে জনযাত্রা শুরু হবে। পথে পথে যোগ দেবেন বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ। আর এছাড়াও ১০ থেকে ১৫ মার্চ জনযাত্রা চলাকালীন সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, ক্লাব, পাঠাগার, পাঠচক্র সুন্দরবনধ্বংসী তৎপরতার বিরুদ্ধে গান, নাটক, কবিতা, সমাবেশ, মিছিলসহ নানা আয়োজন করবেন।

আমরা মনে করি সরকারের এই বিধ্বংসী প্রকল্প থেকে দেশ ও মানুষকে বাঁচাতে জাতীয় ঐক্য ও জাতীয় জাগরণের বিকল্প নেই। আমরা দল মত নির্বিশেষে সকলকে সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে শামিল হবার আহবান জানাই।”