?> শ্যালা নদী দিয়ে জাহাজ চলাচল: আবারও ঝুকির মধ্যে সুন্দরবন « NCBD – National Committee of Bangladesh

Wednesday, January 7th, 2015

শ্যালা নদী দিয়ে জাহাজ চলাচল: আবারও ঝুকির মধ্যে সুন্দরবন

সরকার সুন্দরবনের শ্যালা নদী দিয়ে আবারও জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে। ৭ জানুয়ারি থেকে শ্যালা নদী দিয়ে জাহাজ চলাচলের অনুমোদন দেয়ার সময় সরকার বলেছে আগামী জুন মাসের মধ্যে নাকি ঘষিয়াখালী চ্যানেলের ড্রেজিং কাজ সম্পন্ন করা হবে।গত ৯ ডিসেম্বর তেল দুর্ঘটনা ঘটার পর পর সরকার শ্যালা নদী পথ বন্ধ করে সাময়িক বিকল্প হিসেবে পশুর চ্যানেল দিয়ে জাহাজ চলার কথা বলেছিল, কিন্তু দূরত্ব এক দেড়শ কিলোমিটার বেড়ে যাওয়া এবং কিছুটা সাগর পথ পাড়ি দিতে হওয়ার কারণে নৌযান মালিকরা ঐ বিকল্প পথে জাহাজ চালাতে অস্বীকার করে এবং নৌমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রাণাধীন শ্রমিক সংগঠন অনির্দিষ্ট কালের নৌ-ধর্মঘটের হুমকি প্রদান করে। এরকম একটা প্রেক্ষিতে সরকার আবার শ্যালা নদী দিয়ে নৌযান চলচলের অনুমতি দিল। সরকার বলেছে, কোন তেল পরিবহনকারী জাহাজ এই পথ দিয়ে চলাচল করতে পারবে না। প্রশ্ন হলো, তেল ছাড়াও আরো বিভিন্ন বিপদজনক কার্গো যেমন ফ্লাই অ্যাশের জাহাজ ও তো এই পথে চলাচল করে, সেগুলো দুর্ঘটনায় পড়লে কিংবা অবৈধভাবে রাতের আধারে তেলের ট্যাংকার চলাচল করলে তার দায় কে নেবে? কে নিশ্চিত করবে আবারও এই পথে একই ধরণের দুর্ঘটনা ঘটবে না? সবচেয়ে বড় কথা দুর্ঘটনা ছাড়াও বনের ভেতর দিয়ে জাহাজ চলাচলের কারণে জাহাজের ঢেউ, শব্দ, ও জাহাজ থেকে নি:সৃত বর্জ্যের কারণে বনের যে ক্ষতি হবে তার দায়ই বা কে নেবে?

পশুর নদীকে সরকার বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহার করতে বললেও এই নদীপথটিও সুন্দরবনের মধ্যেই অবস্থিত, ফলে এ পথ দিয়ে জাহাজ চলাচল করাটাও সুন্দরবনের জন্য বিপদজনক।এই পথ দিয়েই সরকার রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা পরিবহন করার পরিকল্পনা করেছে।মংলা বন্দরের ভৌগলিক অবস্থানের কারণেই সুন্দরবনের মধ্যে দিয়ে জাহাজ চলাচল এড়ানোর একমাত্র উপায় হলো মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলটি দ্রুত চালু করা।  

 

সুন্দরবনের মধ্যে দিয়ে নৌ পথের মানচিত্র: আবু দাইয়ান

 ২০১১ সালে পলি পড়ে বন্ধ হওযার আগ পর্যন্ত এই চ্যানেল দিয়েই মংলাবন্দর অভিমুখী জাহাজ সুন্দরবনকে বাইপাস করে চলাচল করেছে।এই মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল সময় মতো ড্রেজিং এর ব্যাপারে সরকারের দীর্ঘ অবহেলার কারণেই সুন্দরবন আজ ঝুকির মধ্যে পড়েছে।২০১১ সাল থেকে শ্যালা নদী চালু হওয়ার পর থেকেই ঘষিয়াখালী খাল ড্রেজিং এর কথা শোনানো হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীও আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু তিন বছর পার হয়ে গেলেও ড্রেজিং করা হয় নি, মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলের সংযোগ খালগুলোতে প্রভাবশালী ঘেরমালিকদের দেয়া বাধও অপসারণ হয় নি। অথচ সময় মতো ড্রেজিং ও সংযোগখালের বাধগুলো অপসারণ করা হলে ঘষিয়াখালী খাল দিয়ে নৌযান চলাচল করতে পারতো এবং সুন্দরবনের মধ্যে দিয়ে জাহাজ চলাচলের কোন প্রয়োজন থাকতো না, ফলে তেল দুর্ঘটনার মতো বিপর্যয়ও ঘটতো না।

 অবিলম্বে মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলের ড্রেজিং সম্পন্ন করতে হবে।সেই সাথে শ্যালানদী দিয়ে শুধু তেল নয়, ফ্লাই অ্যাশ সহ সকল বিপদজনক কার্গো চলাচল বন্ধ করতে হবে।