?> জাতীয় সম্পদ ও সুন্দরবন রক্ষায় প্রতিবাদী গান ও নাটক « NCBD – National Committee of Bangladesh

Sunday, October 26th, 2014

জাতীয় সম্পদ ও সুন্দরবন রক্ষায় প্রতিবাদী গান ও নাটক

জাতীয় সম্পদ ও সুন্দরবন রক্ষায় অনুষ্ঠিত হলো প্রতিবাদী গান ও নাটক। তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির উদ্যোগে গত ২৫ অক্টোবর ২০১৪ শনিবার বিকাল চারটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্ত্বরে আয়োজিত হয় এ অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ  ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহবায়ক প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। এরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক আয়োজন। এ পর্বের শুরুতে প্রতিবাদী গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা। উদীচী’র পর পথনাটক ‘রাজার নতুন পোশাক’ নিয়ে মঞ্চে আসে ‘এই বাংলায়’ সাংস্কৃতি গোষ্ঠীর শ্রীমঙ্গল শাখা। পথনাটকের পর রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিবাদে সঙ্গীত পরিবেশন করেন সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন ও বিবর্তন। সুন্দরবনের পাশে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিলের দাবি নিয়ে নির্মিত পথনাটক ‘চাইনা’ পরিবেশন করেন সমগীত সাংস্কৃতি প্রাঙ্গনের শিল্পীরা। সংহতি জানিয়ে সঙ্গীত পরিবেশন করেন কৃষ্ণকলি ও কফিল আহমেদ।এরপর সুন্দরবন রক্ষার আহবান নিয়ে সঙ্গীত পরিবেশন করে সমগীত।সুন্দরবনের পাশে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ক্ষতিকর প্রভাব ও তা প্রতিরোধের ডাক নিয়ে নির্মিত বিবর্তনের নাটক ‘ সুন্দরী উপাখ্যান’ ও ‘এই বাংলা’র নারায়ণগঞ্জ শাখার নাটক ‘শিকার’ পরিবেশিত হয়।সবশেষে প্রতিবাদী গান পরিবেশন করে গানের দল লীলা।


ছবি: উদ্বোধন ঘোষণা করছেন প্রকৌশলী শেখ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

ছবি: উদীচি’র সঙ্গীত পরিবেশনা

ছবি: ‘এই বাংলায়’ সাংস্কৃতি গোষ্ঠী’র শ্রীমঙ্গল শাখার পরিবেশনা ‘রাজার নতুন পোশাক’।

ছবি: স্বাগত বক্তব্য রাখছেন আনু মুহাম্মদ

 

ছবি: সঙ্গীত পরিবেশন করছে সাংস্কৃতি ইউনিয়ন

 

ছবি: সঙ্গীত পরিবেশন করছে সমগীত

ছবি: গান গাইছেন সঙ্গীত শিল্পী কৃষ্ণকলি

ছবি: গাইছেন গণসঙ্গীত শিল্পী কফিল আহমেদ

ছবি: চলছে বিবর্তনের নাটক ‘সুন্দরী উপাখ্যান’

 

ছবি: সমগীত-নারায়ণ গঞ্জ শাখার নাটক- ‘চাইনা’

 

ছবি: সঙ্গীত পরিবেশন করছে গানের দল লীলা।

ছবি: উপস্থিত দর্শকদের একাংশ

প্রতিবাদী গান,নাটক ও বক্তৃতার মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ও ভূমিদস্যুদের তৎপরতার ফলে সুন্দরবনের সম্ভাব্য বিপর্যয়ের চিত্র ও সেই বিপর্যয় থেকে সুন্দরবন সহ গোটা বাংলাদেশকে রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।  বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক বিকল্প থাকলেও সুন্দরবনের কোন বিকল্প নাই। সকল বিধি মেনে, জাতীয় স্বার্থ নিশ্চিত করে, স্বচ্ছতার সঙ্গে এবং জনসম্মতি নিশ্চিত করে বাংলাদেশের অন্যত্র এরকম বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে পারে। এই কেন্দ্র থেকে যে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে তার চাইতে বেশি বিদ্যুৎ, ২০ ভাগের ১ ভাগ অর্থে, বিদ্যমান বিদ্যুৎ কেন্দ্র মেরামত ও নবায়ন করেই পাওয়া সম্ভব। নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার বৃহৎ উদ্যোগ ধ্বংসযজ্ঞ না করে বিদ্যুৎ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে পারে।

দেশি বিদেশি লুটেরাদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে এই সহজ পথগুলো গ্রহণ না করে সুন্দরবন ধ্বংস ও বঙ্গোপসাগরসহ দেশ বিপন্ন করে নানা নীতি ও চুক্তি করা হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ এই দেশের মানুষের, দেশি বিদেশি লুটেরাদের জিম্মি হবার জন্য বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করে নাই। দেশের সম্পদ শতভাগ দেশের মানুষের কাজে লাগাতে হবে, বাংলাদেশ লুন্ঠন ও মুনাফার বলি হবে না। লুন্ঠন ও সম্পদবিনাশী নীতি পরিবর্তন, জনস্বার্থে উন্নয়ন নীতি গ্রহণ এবং জাতীয় সম্পদে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ জাগরণ দরকার। তাতে দেশের সকল পর্যায়ের মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ দরকার।

সমাজের সবচাইতে সংবেদনশীল অংশ লেখক, চিত্রশিল্পী, সঙ্গীতশিল্পী, নাট্যকর্মীসহ সৃজনশীল ও মননশীল মানুষেরা চোখের সামনে এই মহাপ্রাণ সুন্দরবন ধ্বংস হতে দেখতে পারেন না। তাই, তাঁরাও বেদনাহত, বিক্ষুব্ধ, প্রতিবাদী। অনেকেই বিচ্ছিন্নভাবে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এই বেদনা, প্রতিবাদ ও আকাঙ্খাকে সামষ্টিকভাবে প্রকাশের জন্যই ছিল এই প্রতিবাদী গান ও নাটকের আয়োজন।

* ছবিগুলো তুলেছেন- শহীদুল ইসলাম সবুজ, মওদুদ রহমান, মোহাইমেন লায়েস।